কিন্তু মন্ত্রী ওই কথা বলার পাঁচ-সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার মধ্যেই জামালপুর সরিষাবাড়ি উপজেলায় দেখতে পাওয়া হাতিটির ওপর ঘুমপাড়ানি গুলি বা ট্রাঙ্কুলাইজার প্রয়োগ করা হয়। বন বিভাগের কর্মীরা ওই অস্ত্র ছোঁড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই হাতিটি এক কিলোমিটার দূরে গিয়ে একটি গ্রামের পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। হাতিটির তখন পানিতে তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম। সে সময়ে ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন কয়েকশো গ্রামবাসী।
কামরাবাগ ইউনিয়নের কয়রা ও ঢানাঢা গ্রামের বাসিন্দারা পুকুরে নেমে মোটা দড়ি হাতির পায়ের সঙ্গে বেঁধে সেটিকে টেনে তোলেন। বেহুঁশ হাতিটিকে একটি বড় আমগাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়।
আসামের জঙ্গল থেকে জুন মাসে হাতিটি বন্যায় নদীর পানির সঙ্গে ভেসে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। ভারত থেকে, মূলত আসাম থেকে বনবিভাগের কর্মকর্তাদের এক প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে যান হাতিটিকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে। কিন্তু তাদের সেই চেষ্টা ফলপ্রসূ হয়নি। ব্যর্থ হয়ে তারা ফিরে আসেন।
তবে হাতিটিকে কাবু করা গেলেও আসামের বন বিভাগের একটি সূত্রের খবর, তাকে এখনই ভারতে ফিরিয়ে আনতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। এক কর্মকর্তার কথায়, ‘এক মাসের বেশি সময় ধরে হাতিটি পানিতে ছিল। প্রচুর ভিজেছে। ওর স্বাস্থ্যের অবস্থা ভাল নয়। আগে বিশ্রাম ও চিকিৎসার প্রয়োজন।’
ওই কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশের শেরপুরের গজনিতে উদ্ধার হওয়া হাতিদের একটি পুনবার্সন কেন্দ্র আছে। ভারত চাচ্ছে, সেখানেই আপাতত হাতিটিকে রেখে তার শুশ্রূষা ও যত্ন নেওয়া হোক।
আসামের বনবিভাগের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, এর আগে বন্যায় বা অন্য কোনওভাবে বাংলাদেশে গিয়ে পড়া একাধিক ভারতীয় হাতি গজনির ওই পুনর্বাসন কেন্দ্রে আছে। তাদের সঙ্গে থাকতে হাতিটির ভালোই লাগবে বলে মনে করছেন ভারতের বিশেষজ্ঞরা।
আসামের বন বিভাগের আরেক আধিকারিক বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছিলাম, বনপথে হাতিটিকে তাড়িয়ে যাতে ফের ভারতে নিয়ে আসা যায়। সেটা হয়নি। এখন ধরা পড়া হাতিটিকে সড়কপথে ফিরিয়ে আনার অনেক ঝক্কি। ট্রাক চাই, বিশাল আয়তনের খাঁচা চাই। এখনই সে সবের বন্দোবস্ত করা একটু মুশকিল। তার ওপর নিরাপত্তার দিকটিও জরুরি। তার চেয়ে হাতিটি এখন আমাদের পড়শি দেশের আতিথেয়তায় থাকুক। আমরা ওকে দেখে আসবো।’
আরও পড়ুন:
অবশেষে বন্য হাতিটি উদ্ধার
/এফএস/