ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ ও উন্নয়নের সুবিধা তৃণমূলে নিতে নতুন নতুন বিভাগ সৃষ্টির কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশে বর্তমানে আটটি বিভাগ রয়েছে। আরও বিভাগ করা হবে। ঢাকা বিভাগকে ভেঙে ময়মনসিংহ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে পরিকল্পনা আছে, ঢাকা বিভাগটাকে আরেকটু ছোট করে দেওয়া।
বুধবার নিজ কার্যালয়ে নবগঠিত ময়মনসিংহ বিভাগের উন্নয়ন পরিকল্পনা সংক্রান্ত সভায় এ মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন, বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আযম,প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ,প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম ও প্রেস সচিব ইহসানুল করিমসহ সংশ্লিষ্ট সচিব ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কিছু হলেই রাজধানীতে ছুটে আসার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৬ কোটি মানুষের কাছে সেবা পৌঁছে দিতে হলে আমাদের ক্ষমতাকে আরও বিকেন্দ্রীকরণ করা একান্তভাবে প্রয়োজন।
এসময় তিনি প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, দুই দশক পর কী হতে পারে, তা মাথায় রেখেই শহর বা অবকাঠামো উন্নয়ন পরিকল্পনা করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী জানান,সরকারের দায়িত্ব বাংলাদেশের মানুষের কাছে সেবা পৌঁছে দেওয়া। তাই, সরকার গঠনের পর থেকে স্থানীয় সরকারগুলোকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে জনগণের কাছে সেবা পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে।
শেখ হাসিনা বলেন,এখন অনেক শহর এমন উন্নত হয়ে গেছে যে, ট্রাফিক জ্যাম হচ্ছে। বাইপাস করতে হচ্ছে। এসব চিন্তা-ভাবনা আমাদের আগে থেকেই করা উচিত।
আগাম পরিকল্পনার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ,যখনই আমরা যে পরিকল্পনা নেবো, এটা মাথায় রাখবেন যে,আজ থেকে ২০ বছর পর কতটা উন্নতি হতে পারে, জনসংখ্যা কতটা হবে এবং কী হতে পারে।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়বে, সে কথা মাথায় রেখেই কিন্তু আমাদের পরিকল্পনা নেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে চীন কীভাবে কাজ করেছে, সে দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন সরকার প্রধান। এই দূরদৃষ্টিটা তাদের (চীনাদের) আছে। অর্থাৎ যে কোনও পরিকল্পনা নিতে গেলে আমাদের দূরদৃষ্টিসম্পন্ন হতে হবে।
স্থানীয় সরকারকে আরও শক্তিশালী করার আগ্রহের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনও একটা কিছু হলেই ঢাকা ছুটে আসতে হবে। এভাবে তো মানুষের সেবাটা নিশ্চিত করা যাবে না। এ জন্য ক্ষমতাটাকে বিকেন্দ্রীকরণ করা একান্তভাবে প্রয়োজন।
তিনি জানান,আগেই গড়ে ওঠা সিলেট শহরকে রেখে সুরমার ওপাড়ে নতুন বিভাগীয় শহর গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। রংপুরেও নতুন জায়গায় বিভাগীয় শহর গড়ে তোলার নির্দেশনা রয়েছে।
একইভাবে ময়মনসিংহের পুরনো শহর রেখেই ব্রহ্মপুত্র নদের ওপারে নতুন বিভাগীয় শহরের স্থাপনা গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ময়মনসিংহ শহর একটা গুরুত্বপূর্ণ শহর ছিল। জায়গা পছন্দ করে দিয়েছি; আধুনিক, সুন্দর একটা শহর গড়ে উঠুক।
শেখ হাসিনা বলেন, শহর বাড়তে থাকে। একসময় ঢাকা বিশ্ববিদল্যায় ঢাকা শহরেরর বাইরে করা হয়েছিল। মহাখালীর টিবি হাসপাতাল শহরের বাইরে গ্রামে করা হয়েছিল। ১৯৬১ সালে আমরা যখন ধানমণ্ডি আসি, আশপাশে তখনও ধানক্ষেত। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড,সামাজিক কর্মকাণ্ড বিস্তৃত হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই শহর গড়ে উঠছে।
এসময় নতুন আবাসিক এলাকা বা শিল্পাঞ্চল হলে, সেখানে বৃষ্টির পানি ধরে রাখতে জলাধার তৈরির নির্দেশও দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিকল্পিতভাবে না করলে আগুন লাগলে নেভানোর পানি কোথায় পাবো! একটা দৃষ্টান্ত দেই। বসুন্ধরায় যখন আগুন লাগলো, পানি পাওয়া যাচ্ছিল না আগুন নেভাবার। পানি নিতে হলো সোনারগাঁও হোটেলের সুইমিংপুল থেকে। তাহলে কি আমাদের ভবিষ্যত সুইমিংপুলেই আটকে থাকবে?
পান্থপথে একটা খাল ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেটাকে বক্স কালভার্ট করে খালটাকে বন্ধ করে দিয়ে ওই এলাকার পরিবেশটাই নষ্ট হয়ে গেছে। ধানমণ্ডি লেক থেকে হাতিরঝিল হয়ে সোজা নদী পর্যন্ত সংযোগ ছিল।
পিএইচসি/এবি
আরও পড়ুন
আগামীকাল এইচএসসি'র ফল প্রকাশ
আফসানা হত্যাকাণ্ড
লাশ ফেলে গেছে দুই তরুণ, সিসি টিভি ফুটেজ দেখছে পুলিশ