প্রকাশক, লেখক ও সাংবাদিক হিরন্ময় হিমাংশু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, 'মঙ্গলবার সকালে রতনতনুর লাশ বাংলা একাডেমিতে নেওয়া হলে একাডেমির সচিব আনোয়ার হোসেন বাধা দেন। তিনি আমাদের বলেন, বাংলা একাডেমিতে বিশিষ্ট লেখক ছাড়া কোনও লেখকের মরদেহ রাখা হয় না।’
এ ব্যাপারে কথা বলতে মহাপরিচালকের দায়িত্বে থাকা সচিব আনোয়ার হোসেনকে ফোনে পাওয়া যায়নি। পরে একাডেমির পরিচালক (জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ) অপরেশ কুমার ব্যানার্জী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এটা নিয়ে সচিব স্যার বলতে পারবেন। তার কাছেই জানতে চান। এ ব্যাপারে আমি কিছু বলব না।’
প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক ড. শামসুজ্জামান খান বিদেশে থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। একাডেমির সভাপতি ড. আনিসুজ্জামানকে ফোন করা হলেও তার সাড়া মেলেনি।
রতনতনুর লেখা উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে আছে- অগ্রসর বাংলাদেশ, অপরাজেয় বাংলাদেশ, বাংলাদেশের সাহিত্য, নোবেলবিজয়ীদের কথা, বাংলাদেশের রাজনীতি প্রত্যাশা ও বাস্তবতা, ভাষা আন্দোলন মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা ও বাংলাদেশের রাজনৈতিক অপসংস্কৃতি।
লেখক রতনতনু বাংলা একাডেমি তরুণ লেখক প্রকল্পের প্রথম ব্যাচের সদস্য ছিলেন। পরবর্তীতে কোর্স শেষ হলে প্রতিষ্ঠানটি তার ‘মানুষের সরূপ’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধের বই প্রকাশ করে। ২০১৪ সালের বাংলা একাডেমি সাধারণ পরিষদের বার্ষিক সভার পুস্তিকা থেকে জানা যায়, রতনতনু ঘোষ প্রতিষ্ঠানের জীবনসদস্য। ওই বছরের সাধারণ সভায় উপস্থিতির তালিকার তার নাম রয়েছে। জীবনসদস্য ক্যাটাগরিতে তার ক্রমিক নং ২৮০, জীবন সদস্য নাম্বার: ১২৫৯।
এদিকে রতনতনু ঘোষের মরদেহ বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চের রাখতে বাধা দেওয়ার ঘটনার সমালোচনা করেছেন লেখক-কবিরা।
সাংবাদিক ও কবি শিমুল সালাহউদ্দিন ফেসবুকে লেখেন, ‘বাংলা একাডেমি যে একটা আস্তাবলে পরিণত হয়েছে তা আবার প্রমাণ করলো পেশায় অধ্যাপক, বহু সংখ্যক গ্রন্থের প্রণেতা, বাংলা একাডেমীর আজীবন সদস্য ও বাংলা একাডেমীর তরুণ লেখক প্রকল্পের পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক রতনতনু ঘোষের মরদেহকে শ্রদ্ধা অর্পনের জন্য ঢুকতে না দিয়ে। এই বাংলা একাডেমি কারা চালায়? তারা কি পশু না প্রশাসক? তাদের কি কারো কাছেই কোনও জবাবদিহিতা নাই? এমনকি নিজের বিবেকের কাছেও।’
রম্যলেখক শফিক হাসান লেখেন, ‘রতনতনু ঘোষ এর মরদেহ ভেতরে ঢোকাতে দিলো না বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ । তিনি নাকি বিশিষ্ট লেখক নন! বিশিষ্টতার সংজ্ঞা কী?’
এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার (৫ অক্টোবর) বিকাল ৫টায় শাহবাগে প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন সাহিত্যিকরা।
/এসটিএস/এআরএল/
আরও পড়ুন: