মোনায়েম খানের বাড়ির অবৈধ অংশ উচ্ছেদ





মোনায়েম খানের বাড়ির অবৈধ অংশ ভেঙে দেওয়া হচ্ছে


অবৈধভাবে সড়কের জমি দখলের অভিযোগে পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক গভর্নর মোনায়েম খানের বাড়ির একাংশ ভেঙে দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। বৃহস্পতিবার বিকালে ভ্রাম্যমাণ আদালত এই উচ্ছেদ অভিযান চালান। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাজিদ আনোয়ার।
মেয়র আনিসুল হক সরেজমিনে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি সংবাদিকদের বলেন, ‘এ ধরনের অবৈধ দখল থেকে জনগণের সম্পদ রক্ষার্থে ডিএনসিসির উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
ডিএনসিসি’র সম্পত্তি কর্মকর্তা জানান, ‘বনানী কবরস্থান সংলগ্ন মোনায়েম খানের বাড়ির অবৈধ অংশের কারণে বনানী ২৭ নম্বর সড়কটি সংকীর্ণ হয়ে পড়েছিল। এর ফলে বনানী থেকে বিমানবন্দর সড়কে চলাচলে ওই বাড়ির সামনে প্রায়ই যানজট লেগে থাকে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য মেয়র আনিসুল হকের নির্দেশে সড়ক থেকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয় ডিএনসিসি।’
উচ্ছেদকালে সীমানা প্রাচীর, একটি গাড়ির শোরুম ও একটি একতলা ভবনের অংশবিশেষ অপসারণ করা হয়। ফলে প্রায় পঞ্চাশ বছর পর সড়কটি থেকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করা হলো।
জানা গেছে, পঞ্চাশ বছর ধরে মোনায়েম খানের দখলে ছিল প্রায় দশ কাঠা জমি। এর আয়তন ছিল লম্বায় ২০২ ফুট ও প্রস্থে ৩৬ ফুট। এখানে একতলা ভবন তৈরি করে মোনায়েম খানের উত্তরসূরিরা ভোগদখল করে আসছিলেন। রাজউকের সহযোগিতায় পরিচালিত জরিপে এ তথ্য বেরিয়ে আসে বলে জানান সম্পত্তি কর্মকর্তা।
উচ্ছেদ অভিযানকালে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর আবদুর রাজ্জাক, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাঈদ আনোয়ারুল ইসলাম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ কুদরতুল্লাহ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) লে. কর্নেল এমএম সাবের সুলতান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) লে. কর্নেল মো. আজাদুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পুর) মো. শরিফ উদ্দিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (টিইসি) আরিফুর রহমান প্রমুখ। অভিযান তত্ত্বাবধান করে ডিএনসিসির সম্পত্তি বিভাগ।
প্রসঙ্গত, কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে জন্মগ্রহণকারী আবদুল মোনায়েম খান ১৯৬২ সালের ২৮ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট আয়ূব খান কর্তৃক পূর্বপাকিস্তানের গভর্নর নিযুক্ত হন। ১৯৬৯ এর ২৩ মার্চ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি। গভর্নর থাকাকালে ৬ দফাসহ পূর্বপাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের বিরোধিতা করেন তিনি। মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী মোনায়েম খান একাত্তরের ১৩ অক্টোবর বনানীর এই বাসভবনেই মুক্তিবাহিনীর গেরিলাদের গুলিতে মারাত্মক আহত হয়ে ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

/ওএফ/এমএনএইচ/