তিনদিনের ধর্মঘটে মেডিক্যাল ডিভাইস ব্যবসায়ীরা

মেডিক্যাল ডিভাইস ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট

দাবি আদায় না হওয়ায় তিনদিনের ধর্মঘটে যাচ্ছে মেডিক্যাল ডিভাইস ব্যবসায়ীরা। ৬ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করা হবে। ধর্মঘটের পরেও দাবি পূরণ না হলে আগামীতে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

সোমবার রাজধানীর বিএমএ ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছেন মেডিক্যাল ডিভাইস ব্যবসায়ীরা। একইসঙ্গে মেডিক্যাল ডিভাইস গাইড লাইন-২০১৫ এর অন্তর্ভুক্ত মেডিক্যাল, সার্জিক্যাল দ্রব্যাদি আমদানিকারক ও বিক্রেতাদের ঔষধ প্রশাসনের হয়রানি থেকে মুক্তির দাবিও জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে মো. জাভেদ আহমেদ বলেন, ‘২০১৩ সালের ১৮ জুলাই ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ড্রাগ এ্যাক্ট ১৯৪০-এর ধারা ৩(বি) অনুযায়ী, জীবন রক্ষাকারী মেডিক্যাল ডিভাইসেস এবং সার্জিক্যাল ম্যাটারিয়ালস যেমন, ডিসপোজেবল সিরিঞ্জ, ব্লাড ব্যাগ, আইভি ইনফিউশন সেট, স্ক্যাল্প ভেইন সেট ইত্যাদি ঔষধ জাতীয় পণ্য হিসাবে প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু সম্প্রতি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে প্রায় চার হাজার মেডিক্যাল ডিভাইসেস এর নাম উল্লেখ করে একটি মেডিক্যাল ডিভাইসেস রেজিস্ট্রেশন গাইড লাইন-২০১৫ (প্রস্তাবনা) জারি করা হয়। যা ড্রাগ এ্যাক্ট ১৯৪০ ধারা ৩(বি)-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। যা এখনও গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যে সকল মেডিক্যাল ডিভাইসেস আমদানি ও ক্রয় বিক্রয় করে থাকি, তা গুণগত মানের দিক থেকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এবং আইএসও, সিই, এফডিএ কর্তৃত অনুমোদিত। ড্রাগ এ্যাক্টের ৭৫ বছরেও এর কার্যকারিতা সম্পর্কে কোনও অভিযোগ, এমনকি আজ পর্যন্ত কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়নি। আমদানিকৃত মেডিক্যাল ডিভাইসেস পণ্য বিশ্বমানের এবং ড্রাগ এ্যাক্ট ১৯৪০ সালের আওতাধীন নয়। তাই তা রেজিস্ট্রেশনের আওতামুক্ত রাখার দাবি জানাচ্ছি।’

জাভেদ আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, ‘সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্থ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ঔষধ প্রশাসন একটি। রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি চালু হলে ১২০ কোটি টাকার বাণিজ্য হবে বলে আমি মনে করি।’

তিনি মেডিক্যাল ডিভাইসেস নামে আলাদা একটি অধিদপ্তর করারও দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ মেডিকেল ইন্সট্রুমেন্ট এন্ড হসপিটাল ইকুইপম্যান্ট ডিলার্স এন্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি শরিফ উদ্দিন  বলেন, ‘এই ধর্মঘটের কারণে রোগীদের কোনও প্রকার অসুবিধা হলে তার জন্য ব্যবসায়ীরা নয়, ঔষধ প্রশাসনকে দায়ী থাকতে হবে।’

উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিএমএ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. শামসুল হুদা, বাংলাদেশ মেডিকেল ইন্সট্রুমেন্ট এন্ড হসপিটাল ইকুইপম্যান্ট ডিলার্স এন্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স এসোসিয়েশনের ঢাকা জেলা শাখার সভাপতি মো. জাভেদ আহমেদ ও বাংলাদেশে বৈজ্ঞানিক সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম সেলিমসহ মিডফোর্ট, বাবুবাজার, হাটখোলা ও তোপখানা এলাকার ব্যবসায়ীরা।

এর আগে গত ২৮ নভেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলন করে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত দাবি পূরণের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।

/আরএআর/এসএ/ আপ-এইচকে/