হুন্ডির কারণেই রেমিটেন্স কমেছে: সংসদে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলামগত অর্থবছরে (২০১৫-১৬) বিদেশে কর্মসংস্থান ৪৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে এই সময়ে রেমিটেন্স কমেছে ২ দশমিক ৫০ শতাংশ। বেশি লাভের আশায় হুন্ডি করে টাকা পাঠানোর কারণেই রেমিটন্স কমেছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। স্পিকারের সভাপতিত্বে অধিবেশনের শুরুতেই প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম মিলনের প্রশ্নের জবাবে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী জানান, গত ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় বিদেশে কর্মী গমনের হার ৪৮ শতাংশ বেড়েছে। একই সময়ে রেমিটেন্স ২ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে।
ওই সংসদ সদস্যের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘গত অর্থবছরে ছয় লাখ ৮৪ হাজার ৫৩৭ জন দক্ষ ও অদক্ষ কর্মীর কর্মসংস্থান হয়েছে। এর মধ্যে দক্ষ ২ লাখ ৮৮ হাজার ৩৩ জন, অদক্ষ ২ লাখ ৯৫ হাজার ৭৫০ জন, আধা দক্ষ ৮৫ হাজার ৯০০ জন, পেশাজীবী ৩ হাজার ৪৭ জন এবং অন্যান্য ১১ হাজার ৮০৪ জন।’

অপর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে রেমিটেন্স কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে বিদেশ থেকে হুন্ডি করে অবৈধ পথে টাকা পাঠানোকে দায়ী করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘অনেকে বেশি লাভের আশায় হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশ থেকে টাকা পাঠান। যে কারণে রেমিটেন্স কমেছে। বর্তমানে হুন্ডির ব্যবসা জমজমাট রূপ নিয়েছে। তবে সরকার হুন্ডি ব্যবসা রোধের চেষ্টা করছে। আশা করি সফল হব। সেক্ষেত্রে রেমিটেন্স বাড়বে।’

বেগম সানজিদা খানমের প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের ১৬২টি দেশে কর্মী যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের কোনও দেশেই কর্মী যাওয়া বন্ধ হয়নি।’

মানিকগঞ্জ-২ আসনের মমতাজ বেগমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশে কর্মরত ৬ লক্ষাধিক নারী কর্মীদের মধ্যে বিচ্ছিন্ন দু’একটি যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটতে পারে। আর এসব ক্ষেত্রে নির্যাতিত নারী কর্মীদের তাৎক্ষণিক উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয় প্রদান করা হয়।’

জাসদের নাজমুল হক প্রধানের প্রশ্নের জবাবে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী জানান, সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে সৌদি আরবে প্রায় ৮ লাখ, মালয়েশিয়ায় ২ লাখ ৭৬ হাজার ও ইরাকে ১০ হাজার অবৈধ কর্মীর বৈধতা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

উম্মে রাজিয়া কাজলের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘জি টু জি পদ্ধতিতে ৯ হাজার ৯৩৪ জন কর্মী মালয়েশিয়া গমন করেছে। বর্তমানে জি টু জি প্লাস পদ্ধতিতে কর্মী নেয়ার বিষয়ে মালয়েশিয়া বাংলাদেশের সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। শিগগিরই কর্মী প্রেরণ সম্ভব হবে।’

এম এ আউয়ালের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সৌদি আরবে সরকারিভাবে ৩০৪ জন ও বেসরকারিভাবে ১ লাখ ৩ হাজার ২৮০ জন এবং মালয়েশিয়ার সরকারিভাবে ২ হাজার ৩০১ জন ও বেসরকারিভাবে ৪৮ হাজার ৭৩৪ জন কর্মী গমন করেছেন।’

আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে নুরুল ইসলাম বলেন, ‘২০১০ সাল থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ৪ হাজার ২৫৬ দশমিক ৯২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের রেমিটেন্স এসেছে। এর মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের আটটি দেশ থেকে এসেছে ২ হাজার ৪৪৩ দশমকি ৯৯ মিলিয়ন ডলার এবং অন্যান্য দেশ থেকে এসেছে ১ হাজার ৮১২ দশমিক ৯৩ মিলিয়ন ডলার।’

/ইএইচএস/এমও/