এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণলায়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘দিল্লিতে এ সপ্তাহে স্বরাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় বাংলাদেশকে এ বিষয়ে একটি আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিতে ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এই প্রস্তাবটি পাঠাচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘এর আগেও এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এবার ভারত সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পাঠানোর কথা বলেছে।’
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশের নাগরিকরা যে স্থল বন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন, সেই স্থল বন্দর দিয়েই দেশে ফিরতে হয়। যা অনেকের জন্য অসুবিধাজনক। আমরা সমতার ভিত্তিতে উভয় দেশের জন্য একই ধরনের সুবিধা চাই।’
কয়েক লাখ বাংলাদেশি প্রতি বছর ভারত সফর করে। প্রায় এক লাখ ভারতীয় বাংলাদেশ সফর করে। বাংলাদেশে কর্মরত ভারতের মিশন প্রতি কর্মদিবসে ২ হাজার ৫০০-এর মতো ভিসা ইস্যু করে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘দু’দেশের সীমান্তে অব্যাহত বাংলাদেশি হত্যাকাণ্ড ঠেকাতে মারণাস্ত্রের পরিবর্তে নন-লিথাল অস্ত্র ব্যবহারের আহ্বান জানায় বাংলাদেশ। পাশাপাশি অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিতেও ভারতের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।’ তিনি বলেন, ‘ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়, অনুপ্রবেশকারীরা আক্রমণ করলে ভারতের বাহিনী অস্ত্র চালায়।’
সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় বাহিনীর গুলিতে এ বছরই প্রায় ৩০ জনের মতো বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।
এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত স্বরাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ৩০ জনের বেশি পলাতক আসামি হস্তান্তর করার জন্য একটি তালিকা হস্তান্তর করা হয়। এর মধ্যে সুব্রত বাইন, শিবির ক্যাডার ও চট্টগ্রামের এইট মার্ডার হত্যা মামলার প্রধান হোতা সাজ্জাদ আলি খানসহ কয়েকজন দাগি আসামির নাম আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের পক্ষ থেকেও একটি তালিকা হস্তান্তর করা হয় এবং বাংলাদেশ দল ভারতের প্রতিনিধিদের জানায়, সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে ভারতের তালিকার লোকদের গ্রেফতার করে ভারতের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে, স্বরাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের চোরাচালান প্রতিরোধ ও মাদক পাচার বিষয় নিয়ে আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সীমান্ত এলাকায় বিভিন্ন মাদক তৈরির কারখানা বন্ধের আহ্বান জানানো হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ভারতের সীমান্তে একাধিক ফেনসিডিল ফ্যাক্টরি আছে বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে। আমরা এগুলো বন্ধের আহ্বান জানিয়েছি। এছাড়া সব ধরনের মাদক ও চোরাচালান বন্ধেরও আহবান জানিয়েছি।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-ভারত স্বরাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের ১৮তম বৈঠক দিল্লিতে সোমবার ( ৫ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোজাম্মেল হক খান, ভারতের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব রাজীভ মেহরিশি।
/এমএনএইচ/