বাংলাদেশে ২ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে জায়গা দেওয়া হয়েছে: আইনমন্ত্রী

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে মানবাধিকার দিবসের আলোচনায় আইনমন্ত্রী

বাংলাদেশের ৩০ থেকে ৩৫ হাজার রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার সক্ষমতা (ক্যাপাসিটি) ছিল কিন্তু মানবেতর পরিস্থিতির কারণে এ পর্যন্ত ২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে জায়গা দেওয়া হয়েছে। এরপরেও ফিরিয়ে দিচ্ছি তাও নয়। যাদেরকে না নিলেই নয়, তাদেরকে নেওয়া হচ্ছে। এ মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। 

শনিবার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে মানবাধিকার দিবস-২০১৬ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, মিয়ানমার সীমান্তের ভেতরে রোহিঙ্গাদের ওপর হামলার ঘটনায় দেশটির রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেখানে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশ সরকারের এবং জনগণের অবস্থান স্পষ্ট করা হয়েছে।

এ সময় দেশের আইন-শৃঙ্খল পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের আইনগত অবস্থান তুলে ধরেন তিনি। আইনমন্ত্রী বলেন, দেশে আইন বহির্ভূত হত্যার কোনও অভিযোগ পেলে এবং তা প্রমাণিত হলে কঠোর হাতে তা দমন করা হবে। এ বিষয়ে কারও কাছে কোনও অভিযোগ থাকলেও তা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে জানানোর আহ্বান জানান তিনি। এ ধরনের হত্যা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অনেক বড় প্রতিবন্ধকতা বলেও মন্তব্য করেন আনিসুল হক।

মেয়ে শিশুর বিয়ের বয়স আইনে বিশেষ ব্যবস্থা রাখার কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিয়ের ক্ষেত্রে বয়স অবশ্যই নির্ধারিত আছে ১৮ বছর। তবে বিশেষ কারণে পরিস্থিতি বুঝে ১৮-র আগেও মেয়েকে বিয়ে দেওয়া যাবে এমন আইনি ধারাটি রাখা হয়েছে আমাদের দেশের বাস্তবতা দেখেই। 

তবে এই বিশেষ ব্যবস্থাকে কেউ অপব্যবহার করতে পারবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৮ বছরের আগে বিয়ে দিতে হলে সঠিক কারণ জানিয়ে আদালত থেকে অনুমতি নিতে হবে। আদালত যাচাই বাছাই করে অনুমতি দিলেই কেবল ১৮ বছরের আগে বিয়ে দেওয়া যাবে।

বাংলাদেশের সংবিধান পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে ‘মানবাধিকারবান্ধব’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান মানবাধিকারবান্ধব হলেও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর ২১ বছর এই সংবিধানকে ফুটবলের মতো ব্যবহার করা হয়েছে। ২১ বছরে বঙ্গবন্ধুর হত্যাসহ ১৭ জনকে হত্যার বিচার কি কেউ করতে পারতো না? এই হত্যা কি মানবাধিকার লঙ্ঘন ছিল না? 

৫৭ ধারায় পরিবর্তন এনে নতুন ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট হচ্ছে জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ২০০৬ সালে এ আইনটি করা হয় এবং ২০১৩ সালে কিছু বিষয় নতুন করে যুক্ত হয়। এর পরে নানাজনের নানা প্রশ্ন আসে। ফলে নতুন ধারাটি আসলে ওইসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে। 

এর আগে অনুষ্ঠানে কি-নোট পেপার উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার এম. আমির-উল ইসলাম। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশের (এনএইচআরসিবি) চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন, এনএইচআরসিবি এর পূর্ণকালীন সদস্য মো. নজরুল ইসলাম।

/আরএআর/টিএন/