পাঠ্যবইয়ের যে তিনটি ভুলের কথা স্বীকার করলেন শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ

পাঠ্যবইয়ে ভুল ও মুদ্রণত্রুটির ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, সারাদেশে সময়মতো পাঠ্যবই মুদ্রণ করে সরবরাহ করা অনেক বড় সাফল্য। এর মধ্যে কিছু ভুল ত্রুটি হতেই পারে। শিক্ষকরা এগুলো সংশোধন করে ব্যবস্থা নেবেন। তবে পাঠ্যবইয়ে বড় ধরনের ত্রুটি কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এসময় তিনি গণমাধ্যমে আলোচিত তিনটি ভুলের কথা স্বীকার করে নেন।
এসময় তৃতীয় শ্রেণির ‘আদর্শ ছেলে’ কবিতা, একই শ্রেণির ধর্ম বইয়ের পেছনে ‘ ইংরেজিতে আঘাত অর্থে Hurt কে Heart লেখা বড় ভুল হিসেবে স্বীকার করে নেন তিনি। আর প্রথম শ্রেণির ‘আমার বাংলা বই’য়ের প্রচ্ছদে ছাগলের আম খাওয়ার ছবিকে ভুল হিসেবে স্বীকার করলেও এটি ‘অতটা অস্বাভাবিক নয়’ মন্তব্য করে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পর এটি বাদ দেওয়া যায় কিনা সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন নাহিদ। এসময় আরও কিছু ভুল থেকে যাওয়ার কথাও অকপটে স্বীকার করে নেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘দুটি বড় ভুল চিহ্নিত করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) দুই কর্মকর্তাকে ওসডি করা হয়েছে। এনসিটিবিও ভুলত্রুটি খুঁজে বের করতে কমিটি গঠন করেছে।’
উল্লেখ্য, তৃতীয় শ্রেণির ‘আমার বাংলা বই’য়ে কবি কুসুমকুমারী দাশের লেখা ‘আদর্শ ছেলে’ কবিতাটি বিকৃত ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আর একই শ্রেণির ধর্মবইয়ের পেছনে লেখা হয়েছে (Do not heart anybody)। আর প্রথম শ্রেণির বাংলা বইয়ে ব্যবহার করা হয়েছে ছাগলের আম খাওয়ার ছবিটি।  
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রথম শ্রেণির বইয়ের প্রচ্ছদে আঁকা ‘ছাগলের ছবিটি অতটা অস্বাভাবিক নয়। এটি বাদ দেওয়া যায় কিনা তা দেখা হবে। এছাড়া আরো ভুল রয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পর আমরা ব্যবস্থা নেবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘পাঠ্যবইয়ে ভুলের জন্য কে বেশি দায়ী, আর কে কম, তা তদন্তে বেরিয়ে আসলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘ভুল হতে পারে কিন্তু কিছু ভুল হওয়া উচিত হয়নি। এসব ভুল রেহাই পাওয়ার যোগ্য নয়। তবে পাঠ্যবইয়ের ভুলগুলো শুদ্ধ করার এখনও সময় আছে। তবে ভুলের জন্য বিচার হওয়া উচিত।’
কুসুমকুমারী দাশের ‘আদর্শ ছেলে’ কবিতার প্রথম লাইনে ভুল ছাপা হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, ‘যে এই কবিতা না জানেন তার পাঠ্যপুস্তক প্রস্তুতের সঙ্গে থাকার কোনও যোগ্যতাই নেই।’
এখনও অনেক স্কুল বই পায়নি এমন প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব ব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়ন রয়েছে প্রাথমিকে। তাদের শর্তের কারণে আন্তর্জাতিক টেন্ডারসহ নানা বিষয়ে প্রাথমিকের বই ছাপানোর ক্ষেত্রে সময় কম পেয়েছে এনসিটিবি।’
গত ১ জানুয়ারি ৪ কোটি ৩৩ লাখ ৫৩ হাজার ২০১ জন শিক্ষার্থীর হাতে এবার ৩৬ কোটি ২১ লাখ ৮২ হাজার বই আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেওয়া হয়। এরপর বিভিন্ন গণমাধ্যমে পাঠ্যবইয়ের ভুল নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
শিক্ষামন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন, অতিরিক্ত সচিব রুহী রহমান, অতিরিক্ত সচিব মুফাদ আহমাদ চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ওয়াহিদুজ্জামান।

/এসএমএ/টিএন/

আরও পড়ুন: ভুলত্রুটি ঠিক করে শিশুদের পড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হবে: শিক্ষামন্ত্রী