ফুটপাথের হকারদের উচ্ছেদ করতে সোমবার দ্বিতীয় দিনের মতো অভিযান পরিচালনা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। প্রথম দিনের মতো সোমবারও হকাররা উচ্ছেদের বিরোধিতা করেন। তবে কর্তৃপক্ষের অনমনীয় মনোভাবের কারণে পিছু হটতে বাধ্য হন তারা।
হকারদের উচ্ছেদ ছাড়াও ঢাকা ট্রেড সেন্টারের সামনে থাকা গুলিস্তান ১ নম্বর ইউনিট যুবলীগের কার্যালয়ের সামনের অংশ ভেঙে দেওয়া হয়। এসময় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন যুবলীগ কর্মীরা। ভ্রাম্যমাণ আদালত চলে যাওয়ার পর তারা উচ্ছেদ বিরোধী স্লোগান দেন। এ সময় সড়কটি দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
অভিযানের এক পর্যায়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুস শোয়েব বলেন, আজ (সোমবার) গুলিস্তান এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। মেয়রের ঘোষণা অনুযায়ী কোনও হকারকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার আগে ফুটপাথে বসতে দেওয়া হবে না।
উচ্ছেদ অভিযানের বিরোধিতা করে সোমবার সকাল ১০টায় নগরভবনের সামনে হকারদের অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল হাশিম কবির। তবে সোমবার সকালেই নগরভবনের সামনে গোলাপশাহ মাজার থেকে ফুলবাড়িয়ায় বঙ্গবাজার প্রান্তে ব্যারিকেড দেয় পুলিশ। তাই হকাররা নগরভবনের সামনে দাঁড়াতে পারেননি।
বৈঠক শেষে উচ্ছেদ অভিযানের বিরোধিতাকারীদের প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ‘রাজধানী ঢাকা বিশৃঙ্খলভাবে চলতে পারে না। রাজধানীকে শৃঙ্খলায় আনতে আমরা কিছু কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। এরই অংশ হিসেবে হকার উচ্ছেদ করে রাস্তা পরিষ্কার করা হচ্ছে। এরপর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনা হবে।’ এসময় জনগণের স্বার্থে সড়ক ও ফুটপাথ দখলমুক্ত রাখতে হকারদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘কয়েকজন লোক রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙিয়ে রাস্তা ও ফুটপাথে অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে জনগণের চলাচলে বাধার সৃষ্টি করলে সিটি করপোরেশন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারে। এ ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।’
মেয়রের সঙ্গে বৈঠক শেষে হকার্স ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল হাশিম কবির বলেন, ‘আমরা আমাদের দাবি মেয়রকে জানিয়েছি। তবে তিনি যা বললেন তাতে আমরা সন্তুষ্ট নই।’ সাধারণ সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে বলে জানান তিনি। হকারদের অধিকার আদায়ে আইনি লড়াইয়ের কথাও বলেন এই হকার নেতা।
প্রসঙ্গত, গত ১১ জানুয়ারি (বুধবার) মেয়র সাঈদ খোকন ঘোষণা দেন, কর্মদিবসের দিনের বেলায় গুলিস্তান, পুরানা পল্টন ও মতিঝিলসহ আশপাশের এলাকার ফুটপাথে হকাররা বসতে পারবেন না। তারা বসবেন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর। রবিবার থেকে এ ঘোষণা কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও মেয়রের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রতিটি ফুটপাথে হকাররা মালপত্র নিয়ে বসেছিলেন। তাই ওইদিন দুপুরে শুরু হয় উচ্ছেদ অভিযান।
/ওএফ/এএআর/আপ-এমও/