বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মহাপরিচালক পর্যায়ে ৪৪তম সীমান্ত সম্মেলন শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার পিলখানায় তিনদিনব্যাপী এই সীমান্ত সম্মেলন শেষ হয়।
বৈঠকে দীর্ঘ আলোচনার পর পারস্পরিক আস্থা বাড়ানোর লক্ষ্যে যৌথ প্রশিক্ষণ, যৌথ অনুশীলন ও দুঃসাহসিক প্রশিক্ষণসহ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণে উভয়পক্ষ একমত হয়েছেন। এছাড়া বিজিবি সদস্যদের সন্তানদের মধ্য থেকে মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভারতে মেডিক্যাল ও প্রকৌশল কলেজগুলোতে পড়াশুনার জন্য বৃত্তি প্রদান করবে বিএসএফ।
যৌথ বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের গুলি ও হত্যার মতো ঘটনা শুন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে বিএসএফ সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন ও ভারতীয় নাগরিকদের সচেতনতা বাড়ানোর জন্য বৈঠকে জোর দেন বিজিবি’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন। অন্যদিকে, প্রাণঘাতি নয় এমন কৌশল নেওয়ার কারণে মৃত্যুর ঘটনা অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
কিন্তু এতে বিএসএফ সদস্যদের ওপর আক্রমণের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে বলে মনে করেন বিএসএসফ মহাপরিচালক মহাপরিচালক কে কে শর্মা। তিনি বাংলাদেশি নাগরিকদের অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম বন্ধে বিজিবির সহযোগিতা কামনা করেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বাংলাদেশে সম্ভাব্য অবস্থানের প্রসঙ্গে বিএসএফ প্রধান কে কে শর্মা সহযোগিতা চাইলে বিজিবি প্রধান মেজর জেনারেল আবুল হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ কখনও তার ভূমি অন্যকোনও পক্ষকে বা কোনও রাষ্ট্রের শত্রুপক্ষকে ব্যবহারের সুযোগ দেয় না।’
সমন্বিত সীমান্ত ব্যস্থাপনা পরিকল্পনার ওপর গুরুত্বারোপ করে বিভিন্ন ধরণের আন্তঃসীমান্ত অপরাধ যেমন- মানব পাচার, অবৈধ সীমান্ত অতিক্রম, অস্ত্র, গোলাবারুদ, বিস্ফোরক, মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্য ইয়াবা, জাল মুদ্রা, স্বর্ণ ও গবাদি পশু পাচার এবং সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া ভেঙ্গে ফেলা, ডাকাতি, চুরি, অপহরণ ইত্যাদি প্রতিরোধে উভয় পক্ষই যথাযথ গ্রহনে সম্মত হন।
পরিবেশ দূষণ রোধে ভারতের আগরতলা প্রান্তে এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট- ইটিপি এবং এর সঙ্গে বক্স কালভার্টসহ ড্রেনেজ নির্মাণ কাজ খুব শীঘ্রই শুরু হবে। এছাড়াও সীমান্ত পিলার মেরামত ও সংরক্ষণ, সীমান্ত হাটের সংখ্যা বাড়ানো ও সীমান্ত পর্যটন উৎসাহিত করার বিষয়েও উভয়পক্ষ একমত হয়েছেন।
দু’দেশের শীর্ষ সীমান্ত সম্মেলনে বিএসএফ মহাপরিচালক কে কে শর্মার নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করে। অন্যদিকে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেনের নেতৃত্বে ২৬ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করেন। এতে উভয় বাহিনীর উর্দ্ধতন কর্মকর্তা, উভয় দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, ঢাকার ভারতীয় হাই কমিশন, বাংলাদেশের যৌথ নদী কমিশন, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতর এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
/জেইউ/এমও/