পরিবহন ধর্মঘটের কারণে শুধু দূরপাল্লা নয়, রাজধানীর ভেতরে ও আশপাশের এলাকার কর্মজীবী মানুষকেও চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে দেখা গেছে, সিটি সার্ভিসের হাতে গোনা কিছু বাস চলাচল করায় অপেক্ষমান লোকজন চড়তে পারছেন না। এ কারণে কেউ রিকশা, কেউ অটোরিকশায় গন্তব্যে যান। তবে বেশিরভাগ মানুষই গন্তব্যে যান পায়ে হেঁটে।
সাংবাদিক মাহমুদুল হাসান তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, ঘাতক বাঁচানোর ধর্মঘটে যেন কোনও আপোষ না করা হয়। জনগণ, রাষ্ট্র ও আইন-আদালতের বিরুদ্ধে এই ধৃষ্টতার শেষ দেখা দরকার। দেশে সরকার থাকবে, আইন থাকবে, না দুর্বৃত্তরা থাকবে এর সুরাহা হওয়া দরকার। জনগণের কষ্ট হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া দরকার আমাদেরই স্বার্থে। কারণ আমাদের স্বার্থেই খুনি আইন লঙ্ঘনকারী ড্রাইভারদের রাস্তায় থাকার কোনও অধিকার নেই। আর আমাদের কষ্টের পাশাপাশি ধর্মঘটের কারণে কর্মহীন থাকায় দু একদিন পরই সাধারণ ড্রাইভারদের (নেতাদের বা তাদের পরিবার পরিজনদের কোনও কষ্ট হবে না) পরিবার পরিজন বুঝতে পারবে কষ্ট কি। তখন ধর্মঘটের বারোটা বাজবে। আর এই ধর্মঘটে যারা সক্রিয়, তাদের লাইসেন্সে ঝামেলা থাকলে সরকারের উচিত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। এই সময়ে কেউ কাউকে জিম্মি করার ধৃষ্টতা দেখালে তার সমুচিত জবাব দেওয়া সরকারের নৈতিক, প্রশাসনিক দায়িত্ব।
শঙ্কর মৈত্র লিখছেন, ‘আদালতের বিচারে কারাদণ্ড হয়েছে। এর প্রতিবাদে সড়ক পরিবহনের উশৃঙ্খল শ্রমিকরা দেশের মানুষকে যে ভাবে জিম্মি করছে, তার বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।…’
সরদার আমিন মনে করেন, যদি কানাডার মতো উন্নত দেশে রোড অ্যাক্সিডেন্টে নিহত হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান থাকে, তো আমাদের দেশেও থাকতে হবে। তিনি লিখেছেন, ‘…কেবল বিখ্যাতরা নয়, সাধারণরা মরলেও দ্রুত এরকম বিচার হোক।’
মাইনুল শাহিদ লিখেছেন, এরকম পরিস্থিতি দেখেছি যুদ্ধাপরাধের মামলায় রায় দেওয়ার পর৷ আদালতের রায় অমান্য করে জামাত-শিবির হরতাল-অবরোধ দিয়ে জনজীবন অচল করে দিয়েছিল৷
কিন্তু আজ কি হচ্ছে? অপরাধীর বিচারে সাজা হয়েছে৷ আইন কি বাস চালক কর্তৃক সংগঠিত অপরাধকে বিচারের ঊর্ধ্বে রেখেছে৷ আজ সারা দেশের পরিবহন শ্রমিকরা আদালতের রায়ের প্রতি ঔদ্ধত্য দেখিয়ে কি জনদুর্ভোগ তৈরি করেছে! রাস্তায় বাস নেই৷ হাজার হাজার সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ বাসের অপেক্ষায় ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে আছে রাস্তায়৷ এই জনতার জন্য কেউ নেই!
/ইউআই/এএআর/আপ-এআর/