প্রকাশ্যে ব্যালট পেপারে সিল মেরে তা প্রকাশ্যে দেখিয়ে এই ব্যক্তিরা শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, নির্বাচনি আইন ও বিধি অনুযায়ী ভোটারদের গোপন বুথে ঢুকে ব্যালট পেপারে পছন্দের প্রতীকে সিল মেরে, তা ভাঁজ করে বাক্সে ভরে দিতে হবে। ভোটারদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা ও নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে এই বিধান করা হয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে ভোট দিতে এসে ব্যালটে ধানের শীষে সিল মেরে তা গণমাধ্যমকর্মীদের দেখালেন বিএনপি প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু।
এদিকে আজ বৃহস্পতিবার কুসিক নির্বাচনকে ঘিরে স্থানীয় রাজনীতির অন্যতম প্রভাবশালী সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা যতই থাকুক, ভোটকেন্দ্র থেকে বের হয়ে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি নৌকায় ভোট দিয়েছি।’ দুপুর আড়াইটায় ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুল কেন্দ্রে ভোট দেন তিনি। এরপর কেন্দ্র থেকে বের হয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি নৌকায় ভোট দিয়েছি। যদিও বলা ঠিক না যে কিসে ভোট দিলাম। কিন্তু, আমি রাজনীতি করি।আমার প্রার্থী নৌকা মার্কার। তাই আমি বলছি, আমি নৌকায় ভোট দিয়েছি। অবশ্যই নৌকা জিতবে।’
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এটি আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ব্যক্তিগত গোপনীয়তার যতগুলো আইন রয়েছে, সেগুলো বিবেচনায় নিলে স্পষ্ট হবে যে, ওই ব্যক্তি তার গোপনীয়তাকে ভঙ্গ করেছেন। নিজের হোক বা অন্য কেউ হোক, কারোই এ ধরনের গোপনীয়তা ভঙ্গের এখতিয়ার সংবিধানে দেওয়া হয়নি। আমরা আন্তর্জাতিক যেসব আইনের অনুস্বাক্ষরকারী সেখানেও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ভঙ্গের অনুমোদন নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রকাশ্যে ব্যালট পেপার দেখানো তো নয়ই, সংসদ সদস্য যে উচ্চারণ করেছেন ‘নৌকায় ভোট দিয়েছি’ এটাও প্রকাশ করার অনুমোদন আইন দেয়নি। এক ধরনের ঔদ্ধত্য থেকে এধরনের ঘটনা ঘটানোর প্রবণতা আছে।’
নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এধরনের বিষয় তিনি আগে অবহিত হননি।এই প্রতিবেদকের কাছেই প্রথম শুনেছেন।’ তিনি আরও বলেন,‘আমি আইনজ্ঞ নই,এ বিষয়ে আমার কোনও কিছু বক্তব্য নেই। আমি এর ব্যাখ্যা দিতে পারব না।’
/ইউআই/ এপিএইচ/
আরও পড়ুন: