‘ভারতের প্রতিরক্ষা চুক্তি আছে চীনের সঙ্গেও!’

ভারত-চীনভারতের সঙ্গে যে প্রতিরক্ষা চুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে গত কয়েকমাস ধরে বাংলাদেশ তোলপাড় এবং শনিবার (৮ এপ্রিল) যেটা স্বাক্ষরিত হলো সমঝোতা স্মারকের আকারে, তা আসলে অনেক আগেই সই হওয়া উচিত ছিল বলে মন্তব্য করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর কেন, সেটা একটু পরেই সাংবাদিক সম্মেলনে বিশদে ব্যাখ্যা করলেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এস জয়শঙ্কর।
প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে বাংলাদেশে বিভিন্ন বিরোধী দলের মূল আশঙ্কা ছিল, এটা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য একটা হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারে। সম্প্রতি চীন থেকে কেনা দুটি সাবমেরিন বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে যুক্ত হওয়ার পর,ভারত আতঙ্কিত হয়েই তড়িঘড়ি এই ধরনের একটি চুক্তি করতে চাইছে, এমনও মন্তব্য করেছিলেন অনেকে।
এর জবাবে মি. জয়শঙ্কর এদিন বলেন, ‘আসলে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ইতিহাস অনেক পুরনো। দুদেশের সামরিক কমান্ডাররা নিয়মিতই একে অন্যের দেশে সফর করেন। এই তো সেদিন ভারতের সেনাপ্রধানও ঢাকা থেকে ঘুরে এলেন। আমাদের মধ্যে নিয়মিত যৌথ সামরিক অনুশীলন বা মহড়াও হয়, আমি তো গত দুই বছরে সফররত বাংলাদেশের বহু সেনা কর্মকর্তার সঙ্গেও দেখা করেছি।’
জয়শঙ্কর বলেন,‘কিন্তু কোনও এক বিচিত্র কারণে আমাদের মধ্যে কোনও প্রতিরক্ষা সমঝোতা কখনও হয়নি, আর এখানে একটা ঘাটতি থেকে গেছে বহুদিন ধরেই। এই সহযোগিতাকে একটা প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর ভেতরে নিয়ে আসা উচিত ছিল অনেক আগেই। যে ধরনের ব্যবস্থা আমাদের আরও অনেক প্রতিবেশী দেশের সঙ্গেই আছে। যেমন শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, ভুটান, নেপাল, মিয়ানমার বা আফগানিস্তানের সঙ্গেও!’
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘এমনকি অনেকে শুনলে হয়তো অবাক হবেন চীনের সঙ্গেও আমাদের এই ধরনের প্রতিরক্ষা সহযোগিতার জন্য ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্ট আছে।’
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, ‘ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে এই ধরনের সমঝোতা কখনও না কখনও হওয়ার ছিলই। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বর্তমান সফরে সেই চমৎকার সুযোগটাই আমাদের সামনে উপস্থিত হয়েছে, আর আমরা তাকে কাজে লাগিয়েছি।’
জয়শঙ্করের এই বক্তব্য থেকেই পরিষ্কার, ভারত বাংলাদেশকে এটা বলে আশ্বস্ত করতে চাইছে যে, প্রতিরক্ষা সমঝোতা নতুন কিছু নয় এবং বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধীও নয়।
এমনকি যে চীনের কথা ভেবে ভারত তাড়াহুড়ো করে এই সমঝোতা করতে চয়েছে বলে গুজব, তাদের সঙ্গেও ভারতের একই ধরনের ‘ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্ট’ আছে, এটা উল্লেখ করেও আসলে বাংলাদেশের উদ্বেগকে প্রশমিত করারই চেষ্টা করলেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব।
/এপিএইচ/

আরও পড়ুন- 

তিস্তা নিয়ে আশ্বাস, অঙ্গীকার নেই
পাঁচ বছরের জন্য ১০ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে ভিসা দেবে 

হাসিনা- মোদি বৈঠকে ৩৬ চুক্তি সই





তিস্তা নিয়ে আশ্বাস, অঙ্গীকার নেই

তিস্তাচুক্তি: মোদির মুখের কথায় সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে বাংলাদেশকে
শেখ হাসিনার সঙ্গে মমতার সাক্ষাৎ
পাঁচ বছরের জন্য ১০ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে ভিসা দেবে ভারত
‘ভারতের প্রতিরক্ষা চুক্তি আছে চীনের সঙ্গেও!’