লাকী আখন্দের মৃত্যুতে মন্ত্রিপরিষদে শোক প্রস্তাব গ্রহণ

 

লাকী আখন্দ/ ছবি: সংগৃহীতবীর মুক্তিযোদ্ধা, গীতিকার, সুরকার লাকী আখন্দের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করেছে মন্ত্রিপরিষদ। সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে এ শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

উল্লেখ্য, গত ২১ এপ্রিল দুপুর নাগাদ লাকী আখন্দের শারিরীক অবস্থার অবনতি হয়। ওইদিন সন্ধ্যায় দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় মিটফোর্ড হাসপাতালে। সেখানে সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ কর্তব্যরত চিকিৎসক লাকী আখন্দকে মৃত ঘোষণা করেন (ইন্না...রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল প্রায় ৬১ বছর।

প্রসঙ্গত, গুণী এই সংগীতজ্ঞ অনেক দিন ধরেই মরণব্যাধী ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন। ছয় মাসের চিকিৎসা শেষে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে ২০১৬ সালের ২৫ মার্চ দেশে ফেরেন তিনি। সেখানে কেমোথেরাপি নেওয়ার পর শারীরিক অবস্থার অনেকটা উন্নতি হয়েছিল তার। একই বছরের জুনে আবারও থেরাপির জন্য ব্যাংকক যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে পরে আর তার সেখানে যাওয়া হয়ে উঠেনি।

অসুস্থতার প্রথম থেকেই লাকী আখন্দ ও তার পরিবার কোনও রকম আর্থিক সহযোগিতা গ্রহণের বিষয়ে বেশ কঠোর ছিলেন। দেশের শীর্ষ শিল্পীদের উদ্যোগে সহযোগিতা করতে চাইলেও বিনয়ের সঙ্গে লাকী আখন্দ সেটি গ্রহণে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। অভিমানী এই মানুষটি অন্যের সাহায্য-সহযোগিতায় নিজের চিকিৎসা চালাতে মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন না। তবে ব্যাংককে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় এই সংগীতকারের চিকিৎসার জন্য পাঁচ লাখ টাকা সহায়তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রীয় ভালোবাসা হিসেবে সেটি তিনি গ্রহণ করেন স্বাচ্ছন্দে।

লাকী আখন্দের উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে— ‘এই নীল মনিহার’, ‘আমায় ডেকো না’, ‘কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে’, ‘যেখানে সীমান্ত তোমার’, ‘মামনিয়া, ‘বিতৃঞ্চা জীবনে আমার’, ‘কি করে বললে তুমি’ ‘লিখতে পারি না কোনও গান, ‘ভালোবেসে চলে যেও না’ প্রভৃতি।

লাকী আখন্দ, আধুনিক বাংলা সংগীতের খ্যাতিমান শিল্পী, সুরকার ও সংগীত পরিচালক। তাঁর জন্ম ১৯৫৬ সালের ১৮ জুন। ৫ বছর বয়সেই তিনি তার বাবার কাছ থেকে সংগীত বিষয়ে হাতেখড়ি নেন। শৈশব কেটেছে ঐতিহ্যবাহী পুরান ঢাকার পাতলা খান লেনে। মাত্র চৌদ্দ বছর বয়সে এইচএমভি পাকিস্তানে সুরকার হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। সুরকার হিসেবে আরও কাজ করেছেন এইচএমভি ভারত এবং স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রেও।

এছাড়া মন্ত্রীপরিষদ বৈঠকে ২০১৭ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকের প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এ সময়ে বৈঠক হয়েছে ১০টি, সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ১০১টি, বাস্তবায়ন হয়েছে ৪৭টি, বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াধীন আছে ৫৪টি, অনুমোদিত নীতি ও কর্মকৌশল গ্রহণ করা হয়েছে ৫টি, সমঝোতা স্বারক সই হয়েছে ৮টি, সংসদে আইন পাস হয়েছে ১০টি।

/এসআই/এসএনএইচ/