‘রাজনৈতিক দলে সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীর উপস্থিতি নগন্য’

‘নারীর ক্ষমতায়ন বিবিধ প্রবণতা, সমস্যাও সম্ভাবনা’ শীর্ষকনারী প্রগতি সংঘ এক গবেষণায় জানিয়েছে, স্থানীয় থেকে জাতীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক দলগুলোতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীদের উপস্থিতি এখনও নগন্য। বিশেষ করে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে নারীর উপস্থিতি খুবই কম।  বৃহস্পতিবার (২৫ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সেমিনারে এ বিষয়টি তুলে ধরা হয়।
সেমিনারে উপস্থাপন করা গবেষণা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অনেক নারীর আগ্রহ থাকলেও তাদের সামনে প্রচুর বাধা রয়েছে। আর সে কারণেই নারীর উপস্থিতি নগন্য।

নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীরের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আইনুন নাহার।

‘নারীর ক্ষমতায়ন: বিবিধ প্রবণতা, সমস্যাও সম্ভাবনা’ শীর্ষক প্রবন্ধটি রচনা করেন আইনুন নাহার ও আবু আলা হাসান যৌথভাবে। সেমিনারে প্রবন্ধের সার-সংক্ষেপ প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করা হয়।

গবেষক আইনুন নাহার বলেন, ‘পক্ষপাততুষ্ট ও টাকার খেলার রাজনৈতিক সংস্কৃতি নারীর ক্ষেত্রে বড় বাধা। তাই রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দলগুলোর উপর চাপ সৃষ্টি করা প্রয়োজন।’

রোকেয়া কবীর বলেন, ‘আক্ষরিক অর্থে নারীরা ক্ষমতায়িত হলে নারীর মুক্তি ঘটেনি। নারীরা উত্তরাধিকারে সম-অধিকার থেকে বঞ্চনার পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থানসহ অন্যান্য মানবিক মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সিনিয়র ডেপুটি সিনিয়র পরিচালক রওশন জাহান পারভীন বলেন, ‘নির্যাতিতা নারীরা আইনের অভাব ও আইনের দীর্ঘসূত্রিতা এবং প্রভাবশালীদের দৌরাত্ম, আইন-শৃংখলা বাহিনীসহ অন্যান্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের অসততা ও দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণে নারীরা অসহায় বোধ করে। ফলে নারীরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন।’

সেমিনারে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে, নারীরা যতই প্রত্যক্ষভাবে ঘরের বাইরের অর্থনৈতিক কাজে যুক্ত থাকুক না কেন, গৃহস্থালী কাজের বেশিরভাগ দায়িত্ব পালন করতেও বাধ্য থাকেন।

সেমিনারে জানানো হয়, এই গবেষণার তথ্য ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে। এতে ২৫ টি ফোকাস গ্রুপ আলোচনা ও ১৬ টি নিবিড় সাক্ষাৎকার সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানায় নারী প্রগতি সংঘ।

তথ্যদাতাদের উদ্ধৃত করে গবেষণার সার-সংক্ষেপে বলা হয়, নারীদের এখনও সংরক্ষিত আসনপ্রার্থী হিসেবে দেখবার প্রবণতা খুবই জোরালো। এ ধরণের মনোভাব কমবেশি অন্য সব এলাকাগুলোয় দেখা গেছে বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়।

/এসটিএস/এসএমএ/