গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগে নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশি কূটনীতিক গ্রেফতার

শাহেদুল ইসলাম

গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগে নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশি এক কূটনীতিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি হলেন নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের ডেপুটি কনসাল জেনারেল মোহাম্মেদ শাহেদুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশি নাগরিককে নিজ বাসায় তিন বছরের বেশি সময় ধরে বিনা বেতনে কাজ করানো এবং নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থাগুলো এই তথ্য জানিয়েছে। 

এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার শাহেদুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে ছাড়াতে বন্ডের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মঙ্গলবারই তাকে ছাড়িয়ে আনা হতে পারে। 

এদিকে বার্তা সংস্থাগুলো জানায়, শাহেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে নিউ ইয়র্কের একটি আদালতে এরই মধ্যে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার ১৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

আদালতের নথি অনুযায়ী, বাংলাদেশি দূতাবাস কর্মকর্তা শাহেদুল ইসলাম ২০১২-২০১৬ সালের মে মাস পর্যন্ত কোনও বেতন ছাড়াই মোহাম্মদ আমিন নামের এক ব্যক্তিকে তার বাড়িতে কাজ করতে বাধ্য করেন। গত বছর মে মাসে আমিন পালিয়ে যান এবং পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন।

আমির অভিযোগ অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর পরই শাহেদুল ইসলাম তার পাসপোর্ট কেড়ে নেন এবং তাকে দিয়ে দৈনিক ১৮ ঘণ্টা কাজ করতে বাধ্য করতো। তার পরিবার ও বাইেরর কারও সঙ্গে তাকে যোগাযোগ করতে দেওয়া হতো না।

কুইন্স কাউন্টির অ্যাটর্নির অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ৪৫ বছর বয়সী শাহেদুল ইসলাম ডেপুটি কনসাল জেনারেল অব বাংলাদেশ হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি কুইনসের নিকটবর্তী জ্যামাইকা এলাকায় বসবাস করেন।

নিউ‌ ইয়র্কের কুইন্সবরোর অ্যাটর্নি রিচার্ড ব্রাউন এমন অভিযোগকে ‘খুবই উদ্বেগজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘এই ধরনের অভিযোগ অত্যন্ত উদ্বেগজনক। একজন কনস্যুলার তার বাড়িতে আরেকজনকে কাজে বাধ্য করতে শারীরিক জোর খাটিয়েছেন এবং হুমকি দিয়েছেন। সেই সঙ্গে প্রথমদিন থেকেই ওই কর্মীকে কাজে আটকে রাখার জন্য তার পাসপোর্ট কেড়ে নিয়েছেন। তাকে বেতন দিতে অস্বীকার করেছেন এবং অন্যদেশে থাকা তার পরিবারকে বিপদে ফেলার ভয়-ভীতি দেখান। এইসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে নিশ্চিতভাবেই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তার জন্য শাস্তি পেতে হবে।’

আদালত তাকে ৫০ হাজার ডলারের বন্ড অথবা নগদ ২৫ হাজার ডলারের বিনিময়ে জামিন মঞ্জুর করেছেন। আগামী ২৮ জুন পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালতে।

/এসএ/এসটি/এসএসজেড/এফএস/