গত ২১ জুন বাংলা ট্রিবিউনে ‘ঈদ’ না ‘ইদ’? শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেছিলেন, ‘ঈদ শব্দে ‘ঈ’ এবং ‘ই’ দুটোই লেখা যাবে। তবে যদি কারও আপত্তি থাকে, তবে তা বোর্ডকে জানানো হবে।’
এরপরে গত ২২ জুন তিনি তার ফেসবুক টাইমলাইনেও লিখেছেন, ‘বাংলা একাডেমির আধুনিক বাংলা অভিধানে প্রথম বানান হিসাবে 'ঈদ' এবং বিকল্প বানান 'ইদ' দেয়া আছে । প্রথম বানানটি প্রচলিত; ২য় বানানটি সংস্কারকৃত । কোন মানুষ দীর্ঘকাল কোন বানান ব্যবহার করলে তা ঐতিহ্যে পরিণত হয়ে যায় ।'ঈদ' বানানটি তেমনি । অতএব, দুটি বানানই ব্যবহার করা যায়।’
তার এই পোস্টোর সমালোচনা করে বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক মনসুর মুসা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঈদের ঈ-কে সংস্কার করে ‘ইদ’ করার কোনও প্রয়োজন তো দেখি না। বিদেশি শব্দের যুক্তি দেখিয়ে বানানে পরিবর্তন আনা বাংলা একাডেমির এক প্রকার ‘স্টুপিডিটি’ এবং আহাম্মকি। যাদের কাজকর্ম নেই তারাই এইসব আজাইরা কাজে সময় নষ্ট করেন।’
এছাড়া যেসব শব্দ ব্যাপক প্রচলিত সেই শব্দের বানানে সংস্কার করতে হলে অনেক কিছু ভাবা উচিত। কোনও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে কিনা তা ভাবতে হবে। কস্ট-বেনেফিট অ্যানালাইসিস করতে হবে। প্রথম কথা- এই বানানটি বদলানোর ফলে মানুষের চোখে ‘ইরটিট’ লাগছে, মানুষ লিখতে গেলে অস্বস্তি বোধ করছে। অন্যদিকে এর আগে যত জায়গায় ‘ঈদ’ লেখা হয়েছে, সবখানে ‘ইদ’ লিখতে হবে। এর জন্য সময় নষ্ট,কাগজ নষ্ট, টাকা নষ্ট। এসব কি হিসাব করেছে বাংলা একাডেমি? এর আগে ইংরেজি ‘Dacca’ বানান পরিবর্তন করেও একই কাজ করেছে বাংলা একাডেমি।’
তিনি বলেন, ‘বাংলা হচ্ছে ধ্বনিতাত্ত্বিক একটি ভাষা। অর্থাৎ যেভাবে উচ্চারিত হয় সেভাবে বানান লেখা হয়। এই সুবাদে ঈদ বলতে গেলে যেমন দীর্ঘ উচ্চারণ করছি না। ফলে ঈদ লিখতে ই-কার লেখা যৌক্তিক বলে আমার মনে হয়। এছাড়া প্রচলিত বানান রীতিতে সহজিকরণ করার একটা উদ্যোগ রয়েছে বলে আমার কাছে মনে হয়।’ অন্যদিকে ‘ঈ’ লেখাও বিজ্ঞান সম্মত নয় বলে তিনি মনে করেন।
/আরএআর/ এপিএইচ/