আজ সব হিসাব নিকাশের বাইরে

19251049_1231885803587443_43232808_nডিউটি করতে করতে টিকিট কাটার সময় পাননি ড্রাইভার মো. আজিজ। চাঁদপুর যাবেন, রবিবার সকাল সকাল পৌঁছে গেছেন সদরঘাটে। নতুন কাপড়ের ব্যাগ একহাতে, আরেকহাতে ধরা ৫ বছরের ছেলের হাত, সঙ্গে স্ত্রী। ভিড় ঠেলে ছুটছেন ঘাটের দিকে। যে কোনও উপায়ে বাড়ি পৌঁছানো যাবে এমন আশা নিয়েই ছুটে এসেছেন। হাঁটতে হাঁটতেই তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা শেষদিন পর্যন্ত ডিউটি করি। স্যার-ম্যাডাম ঢাকা ছাড়ার পর আমার ছুটি। ঈদের দিন নামাজ পড়তে যাওয়ার আগে মায়ের মুখটা দেখবো না তা কী করে হয়? তাই এই গরমে ডেকে করে হলেও বাড়ি যেতে হবে।

কেবল আজিজ নয় ঈদের ঠিক আগের দিন বাসস্ট্যাণ্ড ফাঁকা থাকলেও নজরে পড়ার মতো ভিড় ছিল সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে। হিসাবের বাইরে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ছাড়ছে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটের লঞ্চ। ভোরে সদরঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, শ্রমজীবী মানুষ সপরিবারে ঈদ করতে ঢাকা ছাড়ছেন। লঞ্চে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। ডেকে বিক্রি হচ্ছে জায়গা, চাদর ফেলে যে যেমন টাকা দিয়ে পারছে সেই চাদরের স্কয়ার জায়গাটুকু কিনছেন।

19458173_1231885800254110_1260504011_nসকাল থেকে কড়া রোদের কারণে মাথার ওপরে শাড়ি দিয়ে সামিয়ানা তৈরি করা হয়েছে। তবে লঞ্চ যাত্রা নিরাপদ রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যদিও বরিশালের লঞ্চ ভোররাতে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে আবার ফিরে এসেছে বলে দাবি যাত্রীদের।

এখানে এই চাদরের ব্যবসা করেন রাসেল। তিনি বলেন, জায়গাটা আমরা কিনি। তারপর চাদর বিছায়ে রাখি। যারা শেষ মুহুর্তে আস টিকিট ছাড়া তাদের উপকারের জন্যেই করা। ব্যবসা করছেন কিন্তু উপকারের নাম দিয়ে কিনা প্রশ্নে তিনি বলেন, ঈদের আগে দুই তিনদিন এটা আমাদের বোনাস।

19239539_1231885806920776_1628174358_nকত টাকায় চাদরের জায়গা কিনেছেন প্রশ্নে আব্দুল হালিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ২শ’ টাকা। শেষে বসার জায়গা পাইছি, এতেই খুশি। এখন আর কোনও হিসাব নিকাশ নাই। সময় যত যাবে দাম তত কমবে। কিন্তু বাড়ি যাওযার তাড়া আছে সবার। তিনি বলেন, এই চাদর কেনাবেচা আমাদের পরিচিত।

/ইউআই/টিএন/আপ-এসএনএইচ/