একনেকে ৯ প্রকল্প অনুমোদন

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)এর বৈঠকবন্দর নগরী চট্টগ্রামের বিভিন্ন সমাস্যা সমাধান এবং আন্তর্জাতিক মানের শহর হিসেবে গড়ে তুলতে ‘চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’ শীর্ষক প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক নির্বাহী কমিটি (একনেক) এর বৈঠকে। মঙ্গলবার (১১ জুলাই) শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।    
বৈঠকের বৈঠকের পর পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলোর বিষয়ে ব্রিফিং করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব জিয়াউল ইসলাম, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম এবং আইএইডির সচিব মফিজুল ইসলাম।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’ প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে তিন হাজার ২৫০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এর পুরোটাই বাস্তবায়ন করবে সরকার। এ প্রকল্পটির কাজ চলতি বছরের জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২০২০ সালে শেষ হবে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম একনেক সভায় ‘চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার হতে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’ শীর্ষক প্রকল্পটিসহ মোট ছয় হাজার ৩৯৩ কোটি ১৮লক্ষ টাকার প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় নতুন ও সংশোধিত মোট ৯টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পের মোট ব্যয়ের মধ্যে জিওবি পাঁচ হাজার ৯০৫ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৫৭ কোটি তিন লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ৪৩০ কোটি ৪২ লাখ টাকা।

পরিকল্পনা মন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল জানান, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে চট্টগ্রাম শহর এলাকা ও এর দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার সুযোগ সৃষ্টি হবে। পাশাপাশি শহরের কেন্দ্রে ভ্রমণে দূরত্ব ও সময় কম লাগবে এবং বিদ্যমান যানজট নিরসন ও বিমানবন্দরে যাতায়াত পথ সুগম হবে। এ প্রকল্পটির মাধ্যমে বন্দর নগরী চট্টগ্রাম নতুন মাত্রা পাবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, গত অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)সর্বোচ্চবাস্তবায়িত হয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত একটি প্রকল্প উপস্থাপন করা হলে সেটি অনুমোদন না দিয়ে ফেরত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মন্ত্রী বলেন, ‘কেরানীগঞ্জ ও ঢাকায় বিচ্ছিন্নভাবে না করে সমন্বিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়টির উন্নয়ন করতে হবে। এজন্য সাত দিনের মধ্যে জমি খুঁজতে হবে। যত টাকা লাগে তা দেওয়া হবে। এছাড়া নদী ড্রেজিং এ ভারতের সঙ্গে যৌথ নদী কমিশন আলোচনা করে ভারতের কাছ থেকে টাকা নেওয়া যায় কিনা, তা ভাবতে হবে। এছাড়া যেসব জেলায় এক্সপ্রেসওয়ে করা হবে সেসব জেলায় টোলভিত্তিক করার কথাও বলা হয়।

একনেকে অনুমোদিত অন্যন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ পাওয়ার সিস্টেম রিয়ায়েবিলিটি অ্যান্ড ইফিসিয়েন্সি ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। নরসিংদী জেলার অন্তর্ভুক্ত আড়িয়াল খাঁ নদী, হাড়িদোয়া নদী, ব্রহ্মপুত্র নদ, পাহাড়িয়া নদী, মেঘনা শাখা নদী ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র শাখা নদ পুনঃখনন প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হযেছে ৫০০ কোটি ২৮ লাখ টাকা। সীমান্ত নদী তীর সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৬৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। কৃষি শুমারি ২০১৮ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। পাইকগাছা কৃষি কলেজ স্থাপন, খুলনা প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১০১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন এন্ড অ্যালায়েড সায়েন্সে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, দিনাজপুর ও রংপুর এর সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হযেছে ২১২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।

পাঁচদোনা-ডাঙ্গা-ঘোড়াশাল সড়ক উন্নয়ন ইসলামপুর খেয়াঘাট প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৬৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা এবং জামালপুর জেলার তিনটি পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও এনভায়রমেন্টাল স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নীতকরণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।
/এসআই/এসএমএ/