জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম চালু প্রসঙ্গে অনেক তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। তবে আমরা ইভিএম চালুর দরজা একেবারে বন্ধ করিনি, বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। রবিবার নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) ঘোষণা করার সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন ‘বর্তমানে আমাদের সাত/আট শ ইভিএম মেশিন রয়েছে, সেগুলো ৫-৬ বছরের পুরনো প্রযুক্তির। আমাদের নির্বাচনে মোট আড়াই লাখ ভোট কেন্দ্রের জন্য ইভিএম লাগবে। এখানে সরকারেরও আর্থিক সক্ষমতার প্রশ্ন রয়েছে। সব দিক বিবেচনা করে আমরা ইভিএম বিষয়ে বাস্তব সিদ্ধান্ত নেব।’
রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে বাধা বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে কে সভা-সমাবেশ করতে পারল বা কে করতে পারল না, এটা আমাদের দেখার বিষয় না এবং এটা আমাদের দায়-দায়িত্বও না। নির্বাচন কমিশন সুনির্দিষ্ট আইনের মধ্য দিয়ে দায়িত্ব পালন করে এবং তা করে যাচ্ছে। রাজনৈতিক দলের বিষয় দেখবার দায়িত্ব সরকারের, তা সরকার দেখবে। তবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আইন অনুযায়ী তখন এটা কমিশনের দেখার সুযোগ রয়েছে, তখন কমিশন এটা বিবেচনায় নেবে।’
কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ অনুষ্ঠানে সিইসি বলেন, ‘এখন থেকে দেড় বছরের কম সময়ের মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সে লক্ষ্যে আমরা রোডম্যাপ প্রকাশ করেছি। আগামী ৩১ জুলাই থেকে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ হবে। আমরা সুশীল সমাজ, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা, নারী সংগঠনের নেতা, গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংলাপ করবো এবং পর্যায়ক্রমে আমরা রোডম্যাপের কাজ চালিয়ে যাবো।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আমরা সবার প্রভাবমুক্ত থেকে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বদ্ধপরিকর এবং আমরা তা করতে পারবো।’
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপে ৭টি করণীয় বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে। সেগুলো হল- আইনি কাঠামো পর্যালোচনা ও সংস্কার, নির্বাচন প্রক্রিয়া সহজিকরণ ও যুগোপযোগী করতে সংশ্লিষ্ট সবার পরামর্শ গ্রহণ, সংসদীয় এলাকা পুনর্নির্ধারণ, নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং সরবরাহ, বিধি বিধান অনুসরণপূর্বক ভোটকেন্দ্র স্থাপন, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন ও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিরীক্ষা এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট সবার সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ।
এসময় নির্বাচন কমিশনার মাহাবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন ও নির্বাচন কমিশন সচিব মো. আবদুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
/এসএসএ/এএইচ/এমও/