বাংলাদেশে সন্ত্রাসী ঘটনার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে: যুক্তরাষ্ট্র

‘কান্ট্রি রিপোর্ট অন টেরোরিজম ২০১৬’২০১৬ সালে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী ঘটনার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। তবে বাংলাদেশ সরকার সন্ত্রাস দমনে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গেও সন্ত্রাসবাদ দমনে বাংলাদেশ সহযোগিতা করছে। বুধবার (১৯ জুলাই) প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের ‘কান্ট্রি রিপোর্ট অন টেরোরিজম ২০১৬’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর আইএস বাংলাদেশে ১৮টি সন্ত্রাসী ঘটনার দায় স্বীকার করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ঘটনা ছিল গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা, যেখানে পাঁচ জঙ্গির হাতে নিহত হন ২০ জন জিম্মি ও দুই পুলিশ সদস্য।
যুক্তরাষ্ট্রের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর বাংলাদেশে চালানো সন্ত্রাসী হামলাগুলোর মধ্যে দুইটি হামলার দায় স্বীকার করেছে আল-কায়েদা ইন দ্য ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট (একিউআইএস)। এর প্রথমটি ছিল একজন বাংলাদেশি অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টকে হত্যা এবং অন্যটি ছিল যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের একজন স্থানীয় কর্মকর্তা ও তার বন্ধুকে হত্যা। উভয়ক্ষেত্রেই ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়াও আরও কয়েকটি ছোট ছোট হামলার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু সেগুলোর দায় কোনও সংগঠন নেয়নি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা, যেখানে চার জন নিহত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার বেশিরভাগ সময়ে উগ্র সহিংসতাকে রাজনৈতিক বিরোধী ও স্থানীয় সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ড হিসেবে অভিহিত করে থাকে। পাশাপাশি সরকার সন্ত্রাস দমনে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে এবং প্রচুর সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করেছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গেও সন্ত্রাসবাদ দমনে বাংলাদেশ সহযোগিতা করছে উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবাদ বিষয়ক এই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের সীমান্ত, স্থলবন্দর, সুমদ্রবন্দর ও বিমানবন্দরকে আরও নিরাপদ করার জন্য বাংলাদেশকে সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সবচেয়ে উদ্বেগ ছিল। এ কারণে গত বছর যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ থেকে সরাসরি কার্গো পাঠানো নিষিদ্ধ করে।
বাংলাদেশ ইন্টারপোলের সঙ্গে তথ্য বিনিময় করলেও সন্ত্রাসীদের জন্য কোনও ওয়াচলিস্ট নেই। এছাড়া, বাংলাদেশে কোনও অ্যাডভান্সড পেসেঞ্জার ইনফরমেশন সিস্টেম নেই বলেও জানায় যুক্তরাষ্ট্রের রিপোর্টটি।
বাংলাদেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবিরোধী তৎপরতার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে রিপোর্টে বলা হয়, গত বছরের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে বাংলাদেশ পুলিশের নতুন গঠিত কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট ও র্যা ব অনেকগুলো অভিযান চালায়। বিশ্লেষকরা বিশ্বাস করেন, এর কয়েকটি অভিযান, বিশেষ করে র্যা বের অভিযান সাজানো ছিল।
রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার ঘটনায় সামরিক বাহিনীকে ব্যবহারের আদেশ দিয়েছিলেন; যেটি প্রমাণ করে— প্রয়োজন হলে তিনি সামরিক শক্তি প্রয়োগে পিছুপা হবেন না।

আরও পড়ুন-

যেসব কারণে রদবদল হতে পারে মন্ত্রিসভায়

শিশুর হাতে আঁকা বঙ্গবন্ধুর ছবি দিয়ে কার্ড প্রকাশ, নাজেহাল ইউএনও

মন্ত্রিসভায় রদবদলের গুঞ্জন: কেউ কেউ দুশ্চিন্তায়, আশায় ত্যাগী নেতারা

/এসএসজেড/টিআর/