‘কচ্ছপের গতি দিয়ে করপোরেশন চলবে কিভাবে?’

২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট সভায় ডিএসসিসির মেয়র সাঈদ খোকনঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রশাসনিক কাজ কচ্ছপের গতিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সংস্থার ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ রতন। তিনি মেয়রের উদ্দেশে বলেন,‘আপনি যখন দেশের বাইরে ছিলেন, তখন এখানে গতি ছিল না। যে গতি ছিল তা হচ্ছে কচ্ছপের গতি।’

সোমবার (২৪ জুলাই) দুপুরে ডিএসসিসির নগর ভবনের মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মিলনায়তনে সংস্থার চলতি অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন সভায় ওয়ার্ড কাউন্সিলর রতন এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন,‘একটা উচ্ছেদের সময় আমাদের চারজন কাউন্সিলর সহযোগিতা ও পরামর্শ নেওয়ার জন্য প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের কোনও সম্মানই দেওয়া হলো না। তাহলে অবৈধ দখলে থাকা সম্পদ উচ্ছেদ হবে কিভাবে? সেই কচ্ছপের গতি যদি হয়, তাহলে করপোরেশন চলবে কিভাবে?’

এই কাউন্সিলর আরও বলেন,‘আমাদের দক্ষিণ সিটির বড় একটি স্থাপনা মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার। এটা আমাদের বড় একটা সম্পদ। এ ফ্লাইওভার থেকে আয় ধরা হয়েছে এক কোটি টাকা। আমরা এখান থেকে কেন এক টাকাও রাজস্ব পাবো না?’

জবাবে মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ‘এ নিয়ে মামলা মোকদ্দমা রয়েছে।’ তখন কাউন্সিলর রতন বলেন, ‘মামলা, সবখানেই মামলা আর রিট। ঢাকা শহরে আমাদের যে কয়টা মার্কেট আছে সবগুলোতেই মামলা আর রিট করে রাখা হয়েছে। এই রিট ১০-২০ বছরেও সমাধান হয় না। যে কোনও মামলা যদি সিটি করপোরেশন মোকাবিলা করে, তাহলে আমি মনে করি এক থেকে দুই মাসের মধ্যেই সমাধান হয়ে যায়। এই রিটের সঙ্গে কিছু টাউট বাটপার জড়িত। এরা রাজনৈতিক লেবাসধারী। এই লেবাসধারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে আমাদের যারা কর্মকর্তা ও আইনজীবী রয়েছেন তাদের একটা যোগসাজশ রয়েছে।’

বাজেট সভায় ডিএসসিসির কাউন্সিলররামেয়রের প্রতি প্রশ্ন রেখে কাউন্সিলর রতন বলেন,‘তাহলে কিভাবে এই করপোরেশন চালাবেন? এই করপোরেশনের যে পরিমাণ সম্পত্তি অবৈধ দখলে রয়েছে তা ১০০ একরের কম হবে না। এই সম্পত্তিগুলো যদি আমরা উদ্ধার করি তাহলে আমাদের সরকার থেকে সাহায্য নিতে হবে না। আপনি করপোরেশনে গতি আনেন।’

রতন আরও বলেন, ‘আমরা হোল্ডিং ট্যাক্স পাই না। প্রতিটি ভবন মালিকের সঙ্গে আমাদের করপোরেশনের লোকেরা আলাদা কথা বলেন। এই আলাদা কথা বলাটা বন্ধ করতে হবে। নির্দিষ্ট এলাকায় নির্দিষ্ট ফি দিয়ে যেন ট্যাক্স অনলাইনে জমা দিয়ে দিতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে আর আলাদা কথা বলতে হবে না।’

এরপর অন্য কাউন্সিলররাও বক্তব্য রাখেন। তারাও সিটি করপোরেশনের নিজস্ব মার্কেটসহ অন্যান্য খাত থেকে কিভাবে আয় বাড়ানো যায় সে বিষয়ে মতামত দেন।

পরে মেয়র সাঈদ খোকন পরবর্তী বোর্ডসভায় তাদের মতামতগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন। এরপর তিনি চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য তিন হাজার ৩৩৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করেন।

এসময় ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী খান মোহাম্মদ বিল্লাল, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম চৌধুরী, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সালাহ উদ্দিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসূফ আলী সরদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

/এসএস/এএম/