‘মেয়র সাহেব কবে?’ বিলবোর্ডটি নেই, কিছুই জানে না বিজিএমইএ!

রাজধানীর হাতিরঝিল থেকে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের দিকে যাওয়ার পথ। এখানে বাঁ-দিকে বাংলাদেশে তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) ভবনের সামনের ফুটপাত। এর সামনে প্রায় ২০ ফুট বাই ৭ ফুট আকৃতির একটি বিলবোর্ড বসানো হয় গত ১১ আগস্ট। তাতে লেখা ছিল— ‘মেয়র সাহেব কবে?’

বিজিএমইএ ভবনের সামনের ফুটপাতে দৃকের উদ্যোগে বসানো বিলবোর্ডআদালতের রায়ে বিজিএমইএ’র অবৈধ ভবনটি ছয় মাসের মধ্যে ভাঙার কথা। তা না হওয়ার আশঙ্কা থেকে উঠেছে ‘মেয়র সাহেব কবে?’ প্রশ্নটি। দৃকের পক্ষ থেকে এ প্রশ্ন তুলে প্রতিবাদসূচক বসানো হয় বিলবোর্ডটি। কিন্তু রবিবার (১৩ আগস্ট) বিকালে গিয়ে সেখানে দেখা যায়নি এটি।

বিজিএমইএ ভবনটি সরিয়ে নিতে কতদিন সময় আছে, সেই প্রশ্ন তোলা বিলবোর্ডটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কে সরিয়ে নিয়েছে তা জানা না গেলেও বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান গত ১২ আগস্ট বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছিলেন, ‘ছুটির দিনে কেউ এটি বসিয়েছে, আমরা সরিয়ে ফেলবো।’

বিলবোর্ডটি সরিয়ে ফেলার বিষয়ে জানতে বিজিএমইএ সভাপতির সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয় রবিবার (১৩ আগস্ট)। এদিন তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিলবোর্ডটি কে বসিয়েছিল আর কে সরিয়েছে দেখিনি। আমি এর কিছুই জানি না। দৃক কে সেটাও জানি না। আদালত কি বলেছে আমি জানি। এটা আমাকে আলাদাভাবে মনে করিয়ে দিতে হবে না।’

এদিকে দৃকের স্বত্বাধিকারী শহিদুল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অবৈধ ভবন সরানোর ক্ষেত্রে কোনও উদ্যোগ নেই, কিন্তু প্রতিবাদ সরিয়ে ফেলতে ঠিকই উদ্যোগী তারা। এই ভিন্নতা আমাদের মনে রাখতে হবে।’

বিজিএমইএ ভবনের সামনের এই ফুটপাতে দৃকের উদ্যোগে বসানো হয়েছিল বিলবোর্ডবিজিএমইএ ভবনের সামনের ফুটপাতে আশেপাশের খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১২ আগস্ট বিকালের আগে বিলবোর্ডটি সরিয়ে ফেলা হয়। কারা সরিয়েছে সে বিষয়ে অবশ্য তারা কিছু জানেন না উল্লেখ করেছেন। তাদের ভাষ্য, ‘১১ আগস্ট বৃষ্টি চলাকালীন বেশ কয়েকজন এখানে এসে এটি বসিয়েছে। এর পরদিন এটি ভেঙে ফেলা হয়।’

কারা ভেঙেছে জানতে চাইলে ফুটপাতের পাশের চায়ের দোকানের লোকজনের বক্তব্য— ‘এখানে এর আগেও কিছু ব্যানার-ট্যানার বসানো হয়েছিল। কিন্তু এসব রাখা হয় না।’

গত ১২ আগস্ট বিলবোর্ডটি বসানো প্রসঙ্গে দৃকের পক্ষ থেকে বলা হয়, “গণসচেতনতা উদ্যোগ ‘আর নয়’-এর ব্যানারে ১১ আগস্ট বিজিএমইএ’র অবৈধভাবে গড়ে তোলা বহুতল ভবন ‘বিজিএমইএ কমপ্লেক্স’ ভাঙার দাবিতে একটি প্রতিবাদী ফটো ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়েছে।”

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদন ছাড়া গড়ে তোলা বিজিএমইএ’র ১৬ তলা ভবন ভাঙতে রায় দেন সুপ্রিম কোর্ট। এই রায় রিভিউ চেয়ে বিজিএমইএ’র করা আবেদন খারিজ হয়। এরপর রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে কার্যালয় সরাতে গত মার্চে বিজিএমইএ’কে ছয় মাস সময় বেঁধে দেন সর্বোচ্চ আদালত।  

ছবি: সালাউদ্দিন সুমনের ফেসবুক থেকে নেওয়া

/ইউআই/জেএইচ/