আমাদের রাজবাড়ী প্রতিনিধি তানভীর মাহমুদ জানিয়েছেন, গত কয়েকদিনে পদ্মার পানি বেড়ে যাওয়ার জেলার চার উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকা ও নিম্নাঞ্চলের প্রায় ২৭ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া বন্যার কারণে সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে জেলার ৩৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বন্যার পানিতে নষ্ট হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৯৪৪ হেক্টর ফসলি জমি। বন্যায় জেলায় সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে গোয়ালন্দ উপজেলা।
নদী তীরবর্তী ফরিদপুর জেলাতেও সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অবনতি ঘটছে। প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। শুক্রবার সকাল ৯টার সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপদসীমার ১০৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
আমাদের ফরিদপুর প্রতিনিধি ওয়ালী নেওয়াজ জানিয়েছেন, শহর রক্ষা বাঁধের কারণে ফরিদপুর শহরে বন্যার পানি ঢুকতে পারেনি। তবে সদর উপজেলার উত্তর দিকে পদ্মার তীরবর্তী চারটি ইউনিয়ন এরই মধ্যে প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া চরভদ্রাসন উপজেলার সবগুলো ইউনিয়নই এখন বন্যাকবলিত। এদিকে ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে গাজিরটেক ইউনিয়নের হাজিগঞ্জ বাজার।
মধ্যাঞ্চলের জেলাগুলোর মধ্যে প্লাবিত হতে শুরু করেছে মুন্সীগঞ্জ জেলাও। গত কয়েকদিনে জেলার নিম্নাঞ্চলের কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। আমাদের মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি তানজিল হাসান জানিয়েছেন, শুক্রবার সকালে শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকূল পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপদসীমার ৪২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী দুয়েকদিন পানি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয় পাউবো।
গোহাটিতে (বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ১৮০ কি.মি. উজানে) ৩৩ সেন্টিমিটার; পান্ডুতে (বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ১৬০ কি.মি. উজানে) ২২ সেন্টিমিটার; গোয়ালপাড়া (বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ৯০ কি.মি. উজানে) ২৭ সেন্টিমিটার এবং ধুবরী (বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ২৫ কি.মি. উজানে) ১৮ সেন্টিমিটার পানি কমেছে।
বুলেটিনে আরও বলা হয়েছে, আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও তিস্তা-ধরলা-দুধকুমার অববাহিকায় পানি কমতে পারে। তবে গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি অব্যাহতভাবে বাড়ছে। বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। এসময়ে দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চলের, বিশেষ করে নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি অবনতিশীল থাকবে।
আরও পড়ুন-
মেঘনায় পানি কমছে, বাড়ছে পদ্মায়
ভাঙনে বিলীনের পথে রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন
‘ডুইবা মরতাছি, এহুনতুরি কুন মেম্বর-চেয়ারম্যানরে দেইখলাম না’
পাউবোর এক-তৃতীয়াংশ বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত, তবুও ঝুঁকি নিয়ে লাখো মানুষের বাস
পদ্মার পানি বিপদসীমার ১০২ সেমি ওপরে, রাজবাড়ীতে ২৭ হাজার পরিবার পানিবন্দি
/ইউআই/টিআর/