কোরবানির পশুর সংকট হবে না: বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ (ফাইল ছবি)বর্তমান সরকারের বিশেষ উদ্যোগের ফলে দেশে পশুপালন পর্যাপ্ত পরিমাণে বেড়েছে। ফলে পশুর সংখ্যাও বেড়েছে। আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর কোনও সংকট হবে না, মূল্যও স্বাভাবিক থাকবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেছেন, গত বছর দেশে ১ কোটি ৪ লাখ পশু কোরবানি হয়েছিল। এ বছর দেশে কোরবানিযোগ্য পশু উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ১৫ লাখ ৫৭ হাজার।
বাণিজ্যমন্ত্রী রবিবার (২০ আগস্ট) বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণ, চামড়া সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ ও এ বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি সংক্রান্ত সভায় সভাপতিত্ব করে এসব কথা বলেন।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, দেশের চামড়া ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে বিশ্ববাজারে চামড়ার মূল্য বিবেচনায় নিয়ে আসন্ন কোরবানির পশুর চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। গরুর চামড়ার মূল্য ঢাকায় ৫০ থেকে ৫৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, খাশির চামড়ার মূল্য সারা দেশে ২০ থেকে ২২ টাকা এবং বকরির চামড়ার মূল্য সারা দেশে ১৫ থেকে ১৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। মহিষের চামড়ার ন্যায়সঙ্গত বাজার দর নিশ্চিত করতে হবে। চামড়ার প্রকৃত মূল্য নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে। চামড়া যাতে চোরাই পথে দেশের বাইরে না যায় সেজন্য বিজিবি এবং পুলিশ বাহিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, চামড়া সংরক্ষণের জন্য লবণ একটি গুরুত্বপূর্ণ পণ্য। দেশে খাবার ও চামড়ায় ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় এনে ৫ লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত লবণ আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী লবণ আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছে, আসন্ন কোরবানির ঈদের আগেই আমদানিকৃত লবণ দেশে আসবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার এ বছর চামড়াকে ‘প্রোডাক্ট অব দ্য ইয়ার’ ঘোষণা করেছে। আগামী ২০২১ সালের মধ্যে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানি করে সরকার ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এ লক্ষ্য অর্জনে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে। আগামী ১৬ নভেম্বর দেশে লেদার কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। হাজারীবাগের ১৫৫টি ট্যানারি শিল্প সাভারের চামড়া শিল্প নগরীতে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে চলছে। আশা করা যায়, আগামী ঈদ উল আজহার আগেই ১০০টি কারখানা স্থানান্তরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, চামড়া বাংলাদেশের অন্যতম রফতানি পণ্য। এ পণ্যকে যথাযথভাবে প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণ করতে হবে। কোরবানির কাঁচা চামড়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণের জন্য সংশ্লিষ্টদের সজাগ করতে ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে এবং প্রচার মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হবে। এক জেলার কাঁচা চামড়া অন্য জেলায় যেতে পারবে, তবে বিদেশে পাচার হওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না। পাচাররোধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিজিবি ও পুলিশ বাহিনীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এসময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব শুভাশীষ বসু, শিল্পসচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান বিজয় ভট্টাচার্য্য, বাংলাদেশ ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের কো-অর্ডিনেটর মো. আলাউদ্দিন, এফবিসিসিআই-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট মুনতাকিম আশরাফ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তাবৃন্দ, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিজিবি, পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই-এর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
/এসআই/টিএন/