পানিতে তলিয়ে রাস্তাঘাট, বিপাকে শেরপুরের মানুষ

শেরপুরের বন্যাদুর্গতরাপুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ,দশানী ও মৃগী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে শেরপুরের তিন উপজেলার ১৪ ইউনিয়নের ৮০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে ওইসব এলাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। পানিবন্দি লোকজনের যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম নৌকা ও কলার ভেলা। বন্যার পানিতে শেরপুর-জামালপুর সংযোগ সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় গত পাঁচদিন ধরে শেরপুর থেকে জামালপুর হয়ে উত্তরবঙ্গে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে বাড়ছে দুর্ভোগ।

শেরপুর জেলা শহরের সবজি ব্যবসায়ী ফকির চাঁন  বলেন, ‘বন্যার আগে উত্তরবঙ্গ থেকে জামালপুর হয়ে শেরপুরে আসা পণ্যবাহী ট্রাকের ভাড়া ছিল ২০ হাজার টাকা। বন্যার কারণে শেরপুর-জামালপুর সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় ট্রাকগুলো ময়মনসিংহ হয়ে শেরপুরে আসছে। এজন্য ভাড়া দিতে হচ্ছে ২৬ হাজার টাকা। এতে পণ্যের মূল্যও বেড়ে যাচ্ছে।’

সরকারি প্রতিষ্ঠানে র্কমকর্তা মহিউদ্দিন বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে ৩৫ টাকা ভাড়া দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় জামালপুরে যাওয়া যেত। এখন অটোরিকশা ও নৌকার ভাড়া মিলে জামালপুর যেতে প্রায় ১০০ টাকা লাগছে।’

শেরপুর সদর উপজেলার চরপক্ষীমারি ইউনিয়নের কুলুরচর-বেপারিপাড়া এলাকার প্রায় ৫ হাজার বানভাসি মানুষ সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। বন্যার পানির তোড়ে ওই এলাকার অন্তত দুই শতাধিক ঘর ব্রহ্মপুত্র নদের গর্ভে বিলীন হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি মেম্বার শরিফ মিয়া জানান,প্রতিবছরই ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে কুলুরচর-বেপারীপাড়া এলাকার মানুষের বসতভিটা নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। কিন্তু কোনও  প্রতিকার হচ্ছে না। নদী ভাঙনের কবল থেকে তাদের রক্ষায় তিনি স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি করেন।

বলাইয়ের চর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার নাসির উদ্দিন জানান, বন্যার পানি ফসলি জমি,বাড়িঘরে প্রবেশ করায় এলাকার শত শত কৃষক ফসল হারিয়ে দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন। অনেকেই দাদন ও ব্যাংক-সমিতি  থেকে ঋণ নিয়ে এসব সবজি ও ফসলের আবাদ করেছিলেন। তারা এখন দারুণ দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডে দশানি নদীর বাঁধ ভেঙে প্রায় ২৫ হেক্টর জমির শাক-সবজির আবাদ নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষকরা একেবারে শেষ। বাড়িঘরে পানি ওঠায় কৃষকরা গরু-ছাগল নিয়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।

শেরপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পিকন কুমার সাহা সাংবাদিকদের জানান, বন্যাকবলিত শেরপুর সদর উপজেলার প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমির ধান এবং ১২০ হেক্টর জমির সবজির আবাদ বন্যার পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে।

 /এসটি/

আরও পড়ুন: এজলাসে হাঁটু পানি, আদালতের কাজ চলছে রাস্তায়