আইএস-এ যোগদানকারী বাংলাদেশিরা সুশিক্ষিত ও শহুরে: মার্কিন বিশেষজ্ঞের দাবি

এক মার্কিন বিশেষজ্ঞ দাবি করেছেন, আইএসে যোগদানকারী বাংলাদেশিরা প্রচলিত ধারণা থেকে ব্যতিক্রম। ক্রিস্টিন ফেয়ার নামের ওই বিশেষজ্ঞের দাবি,  প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী আইএসে যোগদানকারীদের দরিদ্র ও অশিক্ষিত বলে বিবেচনা করা হলেও সংগঠনটির বাংলাদেশি সদস্যদের অনেকেই উচ্চ শিক্ষিত এবং শহুরে। এক প্যানেল আলোচনায় বাংলাদেশে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএস ও অন্য ধর্মীয় উগ্রপন্থী সংগঠনগুলোর ঘাঁটি গড়ে তোলার প্রসঙ্গ ওঠার পর এসব কথা বলেছেন জর্জ টাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ফেয়ার।
ক্রিস্টিন ফেয়ার

সোমবার (২১ আগস্ট) ওয়াশিংটনে আটলান্টিক কাউন্সিল ফেয়ার আয়োজিত এক প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন জর্জ টাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাবিষয়ক শিক্ষক ক্রিস্টিন ফেয়ার । ‘আইএস ইন সাউথ এশিয়া: অপশনস এন্ড ওয়েস টু রেসপন্ড’শিরোনামের ওই প্যানেল আলোচনায় দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে আইএসসহ অন্য উগ্রপন্থী সংগঠনের কার্যক্রম বিশ্লেষণ করা হয়। এক পর্যায়ে বাংলাদেশি আইএস সদস্যদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে ফেয়ার দাবি করেন, ‘তারা শহুরে, তারা দরিদ্র নয়। সুতরাং হতদরিদ্র ও অজ্ঞ বাংলাদেশিরা আইএস দ্বারা অনুপ্রাণিত হয় বলে যে ধারণার প্রচলন রয়েছে তা সত্য নয়।    

ক্রিস্টিন ফেয়ারের অভিযোগ, বাংলাদেশ সরকার তাকে এ সংক্রান্ত একটি জরিপ পরিচালনার মাঝপথে থামিয়ে দিয়েছে। ফেয়ার বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলো ইসলামি জঙ্গিবাদকে যেভাবে মোকাবিলা করছে শেখ হাসিনা সরকার সেভাবে কাজ করতে পারছে না। তারা তথ্য চায় না, প্রকৃতপক্ষে লোকজনকে তথ্য না দিতে তারা আমাদেরকে জরিপ পরিচালনা করতে দেয়নি।’  তিনি আরও বলেন, ‘৮০০০ মানুষের মধ্যে আমাদের জরিপটি চালানোর কথা ছিল; প্রায় ৪০০০ মানুষের মধ্যে জরিপ হওয়ার পর তা বন্ধ করে দিতে তারা আমাদেরকে বাধ্য করে। পাকিস্তানে আমি কয়েক বছর ধরে জরিপ চালাচ্ছি; তারা কখনও আমাদেরকে থামিয়ে দেয়নি। ইরানে জরিপ হয়েছে, তারাও আমাদের বাধা দেয়নি। কিন্তু বাংলাদেশ বাধা দিয়েছে, তারা আমাদের গণনাকারীদের গ্রেফতার করেছে।’ 

আইএস-এর পতাকা

কেন এ ধরনের বাধা দেওয়া হলো সে প্রসঙ্গে ওই নিরাপত্তা বিশ্লেষক অভিযোগের সুরে বলেন, ‘এর কারণ হাসিনা সরকার তা জানাতে চায় না। কারণ বাংলাদেশে কোনও দলকে সমর্থনের ক্ষেত্রে ইসলামবাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনার বিষয় হিসেবে কাজ করে। বাংলাদেশে কৌশলগত সন্ত্রাসবাদের প্রতি তেমন একটা সমর্থন নেই কিন্তু এসব সংগঠনের লক্ষ্যের প্রতি উল্লেখযোগ্য সমর্থন রয়েছে।’ ফেয়ার জানিয়েছেন, ওই অর্ধ সমাপ্ত জরিপের ফলাফল থেকেই তিনি তার বিশ্লেষণ হাজির করেছেন।