মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলা : এমপি রানাসহ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

টাঙ্গাইলের আদালতে মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলার আসামি এমপি রানা (ছবি-প্রতিনিধি)

টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা,তার চার ভাইসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

আজ বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর)আমানুর রহমান খান রানাকে সকাল ৯টায় টাঙ্গাইল আদালতে হাজির করা হয়। এরপর বেলা ১১টায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে শুনানির জন্য তাকে হাজির করা হয়।এসময় আসামি পক্ষ থেকে কারাগারে চিকিৎসার জন্য আবেদন, পুনঃতদন্ত মামলাটি বাতিলের আবেদন জানালে বিচারক আবুল মনসুর মিয়া আবেদন দুটি খারিজ করে শুধু চিকিৎসার আবেদনটি আমলে নেন। শুনানি শেষে ফারুক আহম্মেদ হত্যা মামলার সব আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। আগামী ১৮ অক্টোবর সাক্ষীদের শুনানির জন্য পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে। এ মামলায় ২৩ জন সাক্ষী রয়েছেন। শুনানি শেষে এমপি রানাকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে পুনরায় কাশিমপুর কারাগারে নেওয়া হয়।

শুনানি চলাকালে আদালত চত্বরে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা আসামিদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।

এ মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী এস.আকবর খান জানান, এর আগেও অসুস্থতাসহ বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষ এমপি রানাকে আদালতে হাজির না করায় এই হত্যা মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি আটবার পিছিয়েছে। নবম বারে হাজির হওয়ায় শুনানি শেষে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

নিহত ফারুক আহম্মেদের স্ত্রী এ মামলার বাদী নাহার আহম্মেদ জানান, আমি আজ  অত্যন্ত খুশি। দীর্ঘদিন পর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হওয়ায় খুনিদের সঠিক বিচার হবে বলে আশা করছি।

আসামিপক্ষের আইনজীবী জহিরুল ইসলাম জহির জানান,কারাগারে চিকিৎসার জন্য আবেদন, পুনঃতদন্ত ও মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়। আদালত চিকিৎসার আবেদনটি আমলে নেন।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে জেলা আওয়ামী লীগের নেতা ও বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ মরদেহ টাঙ্গাইলে তাঁর কলেজপাড়া এলাকায় বাসার সামনে পাওয়া যায়। ঘটনার তিন দিন পর তাঁর স্ত্রী নাহার আহমেদ টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। প্রথমে থানা-পুলিশ ও পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মামলার তদন্ত শুরু করে। ২০১৪ সালের আগস্টে এ মামলার আসামি আনিসুল ইসলাম ওরফে রাজা ও মোহাম্মদ আলী গ্রেফতার হন। আদালতে তাদের স্বীকারোক্তিতে এমপি আমানুর রহমান খান রানা ও তার তিন ভাইয়ের জড়িত থাকার বিষয়টি বের হয়ে আসে। এরপর থেকে আমানুর ও তার ভাইয়েরা আত্মগোপনে চলে যান।

দীর্ঘ ২২ মাস পলাতক থাকার পর এমপি রানা গত বছর ১৮ সেপ্টেম্বর এ আদালতেই আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বর্তমানে তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে আছেন।