একজন মানবিক প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রীকে পা ছুঁয়ে সালাম করছেন এক রোহিঙ্গা নারীমিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনে প্রাণ বাঁচাতে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর আস্থার জায়গা এখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারা মনে করেন, এই মানবিক প্রধানমন্ত্রীই পারেন তাদের ঘরে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে। যিনি আশ্রয় দিয়ে জীবন বাঁচিয়েছেন, খাবার দিয়ে ক্ষুধা নিবারণ করেছেন, সেই শেখ হাসিনার প্রতি তাদের শ্রদ্ধা আর আস্থার জায়গা তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেখতে গেলে তারা এভাবেই মনের কথা প্রকাশ করেন। তারা এখন এই মানবিক প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে আছেন।

শরণার্থী শিবিরে শিশুদের পরম মমতায় জড়িয়ে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় তার সঙ্গে ছোট বোন শেখ রেহানাও ছিলেন। মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালংয়ে নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন তারা।

শিশুটির কথা মনযোগ দিয়ে শুনছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাআগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতনে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বেশিরভাগই আহত ও  ঘরহীন। নির্ধারিত ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গাদের দেখতে গিয়ে সেখানে অবস্থানরত শিশুদের পরম মমতায় জড়িয়ে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সময় নিয়ে মনযোগ দিয়ে তাদের কথা শোনেন। সেখানকার নারীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কান্নাজড়িত মুখ দেখার সঙ্গে সঙ্গে  পা ছুঁয়ে তাকে সালাম করতে এগিয়ে যান।

আহত শিশুর মুখে নির্যাতনের বর্ণনা শুনছেন প্রধানমন্ত্রী (ছবি- ফোকাস বাংলা)প্রধানমন্ত্রী এক আহত শিশুকে দেখতে পান সেখানে। শিশুটির নাকে ব্যাণ্ডেজ করা, চোখ মুখ ফুলে আছে। শেখ হাসিনা ছেলেটির স্বাস্থ্যের খোঁজ খবর নেন।

শিশুটির মুখে নির্যাতনের বর্ণনা শুনে কেঁদে ফেলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাপরিদর্শনের সময় প্রধানমন্ত্রী এক কন্যা শিশুর পরিস্থতি দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। শিশুটির গালে মাথায় হাত বুলিয়ে দেন তিনি। রোহিঙ্গা শিশুরা জানেন না তাদের কী অপরাধ। কেবল ঘর পুড়ে যেতে দেখেছে। কেউবা বাবা-মাকে হারিয়ে মুহূর্তে এতিম হয়ে কেবল প্রাণটা হাতে নিয়ে এসেছে অপরিচিত কারোর হাত ধরে। আশ্রয়দাতা দেশের প্রধানমন্ত্রী তাদের মধ্যে এসেছেন দেখে এই শিশুটিরও ভরসার জায়গা মিলেছে।
রোহিঙ্গা শিবিরে প্রধানমন্ত্রীবাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে ক্যাম্পের রাহিঙ্গারা আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করতে থাকেন। তারা কান্নায় প্রলাপের মতো বলতে থাকেন, আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী আমাদের চায় না। ভিনদেশি প্রধানমন্ত্রী আমাদের দেখতে এসেছেন। আল্লাহ তার মঙ্গল করুন।

১৯৯৪ সালে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা

প্রসঙ্গত, ১৯৯৪ সালে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী  শেখ হাসিনা কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন এবং তখনও তিনি তাদের খোঁজখবর নেন ও সমস্যার কথা শোনেন।

আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা শিশুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদলেন প্রধানমন্ত্রী