মংডুর দোরাবিলে রোহিঙ্গা গ্রামে ফের আগুন (ভিডিও)

মংডুর দোরাবিলে রোহিঙ্গা গ্রামে ফের আগুনরোহিঙ্গাদের বাড়ি-ঘরে ফের আগুন দিয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ছয়টায় মংডুর উত্তর পাশে দোরাবিল এলাকায় আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। টেকনাফে অবস্থান নেওয়া রোহিঙ্গারা জানায়, মংডুর উত্তর পাশে দোরাবিল এলাকার বাড়ি-ঘরে আগুন জ্বলছিল সন্ধ্যা ছয়টার দিকে। মাগরিব নামাজের আগে পূর্বপাড়া পুরোটা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন পুড়ছে পশ্চিম পাড়া।

রোহিঙ্গাদের বাড়ি-ঘরে আগুন দেওয়ার পর প্রাণ বাঁচাতে বুধবার সন্ধ্যার পর মোহাম্মদ জোহার ও আব্দুল মোতালেব পালিয়ে এসেছেন। তারা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বাড়িঘর ফেলে জীবন বাঁচাতে পালিয়ে এসেছি। পূর্বপাড়া পুড়ে শেষ হয়ে গেছে। এখন পশ্চিমপাড়া জ্বলছে।’

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) শেষবারের মতো মাইকিং করে রোহিঙ্গাদের এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেয় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এরপরই ছোট ছোট গ্রামে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। বুধবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশে সীমান্ত ঘেঁষে থাকা গ্রাম দোরাবিল গ্রামে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয়রা বাড়িঘর ফেলে সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। 

এর আগে মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) নাফ নদীর তীরবর্তী এলাকায় আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। শাহপরীর দ্বীপ থেকে দিনব্যাপী নৌকায় রোহিঙ্গাদের আনা হয়। মংডুর নাফ নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে নৌকায় করে রোহিঙ্গা নিয়ে আসার সময় মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনও বাধা দেয়নি। নিরাপদেই রোহিঙ্গারা চলে আসে মাছ ধরা নৌকায়।

এদিকে, রোহিঙ্গাদের পার করায় গত রবিবার অন্তত ৬ থেকে ৭টি মাছধরা ট্রলারে কোস্টগার্ড আগুন দিয়েছে বলে অভিযোগ ছিল। কিন্তু তারপরও রোহিঙ্গা পার করা কমেনি। প্রতিদিন রাতেই রোহিঙ্গা প্রবেশ করছে। এমনকি দিনের বেলাতেও নাফ নদী পার হয়ে শত শত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।

নাফ নদীর তীর ধরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা হেঁটে হেঁটে পাহারা দিলেও রোহিঙ্গা প্রবেশে তারা বাধা দিচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, গত ২৪ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে পুলিশ পোস্টে হামলা চালায় সে দেশের একটি বিদ্রোহী গ্রুপ। এতে ১২ পুলিশ সদস্যসহ বহু রোহিঙ্গা হতাহত হয়। এ ঘটনায় রাখাইন রাজ্যে অভিযানের নামে গত ২৫ আগস্ট থেকে সাধারণ মানুষের ওপর হত্যা, ধর্ষণ, বাড়িঘরে আগুনসহ নানা নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী। এরপর থেকে প্রাণ বাঁচাতে রোহিঙ্গারা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছেন। জাতিসংঘের তথ্য মতে, এ পর্যন্ত তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। তবে স্থানীয় সূত্রগুলোর ধারণা এই সংখ্যা আরও বেশি।