বাংলাদেশে ঢুকেই টিকা পাচ্ছে রোহিঙ্গা শিশুরা (ভিডিও)

টিকাবাংলাদেশে প্রবেশের সময় রোহিঙ্গা শিশুদের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি টিকা দেওয়া হচ্ছে। টেকনাফের ক্যাম্পগুলোতেও এই টিকা দেওয়া হচ্ছে। কক্সবাজারের সিভিল সার্জনের নির্দেশে শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে এ টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। চলবে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

টেকনাফের ভাঙ্গায় রোহিঙ্গা শিশুদের টিকা দিতে দেখা যায়। সেখানে কর্তব্যরত টেকনাফ হাসপাতালের স্বাস্থ্য সহকারী বশির আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তিন ধরনের টিকা দেওয়া হচ্ছে– ভিটামিন, পোলিও ও এমআর।’ তিনি আরও বলেন, ‘ছয় মাস থেকে দশ বছর বয়সীদের এই টিকা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের ২১টি টিম কাজ করছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতেও আমাদের টিম কাজ করছে।’ এছাড়াও হ্নীলা ইউনিয়ন, টেকনাফ সদর, সাবরং ইউনিয়ন, হোয়াইক্যং ইউনিয়ন ও বাহারছাড়া ইউনিয়নে টিকা কর্মসূচি  চলছে।

একই হাসপাতালের স্বাস্থ্য সহকারী শাকের আহম্মেদ বলেন, ‘আমরা শনিবার দুপুর পর্যন্ত ভাঙ্গায় আড়াইশ শিশুকে টিকা দিয়েছি। প্রতিদিন বিকাল ৪টা পর্যন্ত টিকা দেওয়া হবে। টেকনাফে টিকার উপযুক্ত অন্তত ৫০ হাজার রোহিঙ্গা শিশু রয়েছে বলে আমাদের ধারণা। এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে এসব শিশুদের কোনও টিকা দেওয়া হতো না। আমরা তাদের টিকার পর কার্ড করে দিচ্ছি। এই কার্ড দেখালে পরবর্তী টিকাগুলো নিয়মিত তারা যে ক্যাম্পে থাকবে সেখানে পাবে। আমরা আমাদের শিশুদের নিরাপদ ও রোহিঙ্গা শিশুদের নিরাপদ রাখতে চাই। তাই এই ব্যবস্থা।’

গত ২৪ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তত ২৯টি তল্লাশি চৌকিতে হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’ শুরু করে। ২৫ আগস্ট থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা টেকনাফ, উখিয়া ও বান্দরবানের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করা শুরু করে। শনিবার আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানায়, এ পর্যন্ত চার লাখ ৯ হাজার বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর দাবি, প্রায় দুই লাখ রোহিঙ্গা শিশু ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংস অভিযান অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা দশ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর। বাংলাদেশে আগে থেকেই অন্তত চার লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। মিয়ানমার এদের ফেরত নিতে অস্বীকার করে আসছে।