৬০ দিন পর হাসপাতাল ছাড়লেন সিদ্দিকুর

সিদ্দিকুর রহমান, ভারতের চেন্নাইয়ে ‍চোখের চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পর বিমানবন্দরেপুলিশের টিয়ার শেলের আঘাতে দুই চোখ হারানো সিদ্দিকুর রহমান আহত হওয়ার ৬০ দিন পর হাসপাতাল ছাড়লেন। আজ রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হয়। সন্ধ্যা ৮টার দিকে সিদ্দিকুর রহমান নিজেই মোবাইল ফোনে এ তথ্য বাংলা ট্রিবিউনকে জানান।
সিদ্দিকুর বলেন, ‘আজ (রবিবার) হাসপাতাল ছাড়লাম। ঢাকা-চেন্নাই মিলিয়ে ৬০ দিন পার করলাম হাসপাতালে। কিন্তু চোখের আলো ফিরে পেলাম না। আমি চাকরি পেয়েছি, আগামী অক্টোবরে এসেনশিাল ড্রাগসে জয়েন করবো। কিন্তু আমার বাসস্থানের কী হবে, সেটা বুঝতে পারছি না। চোখ হারানোর আগে বন্ধুদের সঙ্গে খিলক্ষেতে একটি মেসে ছিলাম, সেখানেই আবার উঠেছি। কিন্তু এভাবে কতদিন চলতে পারবো, সেটাও একটা প্রশ্ন। থাকার জায়গা নেই বলে মা বাড়ি ফিরে গেছেন। কিন্তু আমার সঙ্গে মায়ের থাকাটাও খুব প্রয়োজন। সরকার আমার জন্য অফিসের কাছাকাছি কোথাও একটা থাকার ব্যবস্থা করলে আমার জন্য খুব ভালো হতো। এত দূর থেকে যাতায়াত করাটাও তো খুব কষ্টের হবে।’
এর আগে, দৃষ্টি হারানো সিদ্দিকুরকে সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানিতে নিয়োগ দেয় সরকার। গত ১৩ আগস্ট সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
নিয়োগপত্র অনুযায়ী, সিদ্দিকুর রহমানকে এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানির টেলিফোন অপারেটর পদে এক বছরের জন্য অস্থায়ীভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এসময় তার বেতন ধরা হয়েছে ১৩ হাজার টাকা। সঙ্গে আনুষাঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা পাবেন তিনি। একবছর পর চাকরি স্থায়ী হলে তার বেতন হবে ২৩ হাজার টাকা।
উল্লেখ্য, পরীক্ষার রুটিন ও তারিখ ঘোষণাসহ কয়েকটি দাবিতে গত ২০ জুলাই শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়া নতুন সাতটি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে গুরুতর আহত হন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর রহমান। তাকে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। চোখের উন্নত চিকিৎসার জন্য সেখান থেকে তাকে পরে ভারতেও পাঠানো হয়। তবে শেষ পর্যন্ত আর চোখের আলো ফেরেনি সিদ্দিকুরের।