জলবায়ু প্রশ্নে সুবিচারের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

নিউ ইয়র্কে পরিবেশবিষয়ক বৈশ্বিক চুক্তি সংক্রান্ত সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রীপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তন প্রশ্নে আইনগতভাবে সম্পাদিত দৃঢ় ও কার্যকর বৈশ্বিক চুক্তিগুলোকে সামনে এনে সুবিচার নিশ্চিত করতে এবং ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালনে উন্নত দেশগুলোর নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্টভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে অভিযোজন ও প্রশমন কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দায়ীদের স্থানীয় পর্যায় থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক পর্যায় পর্যন্ত চিহ্নিত করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭২তম বার্ষিক অধিবেশন উপলক্ষে জাতিসংঘের সদর দফতরে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ আয়োজিত পরিবেশবিষয়ক বৈশ্বিক চুক্তি সংক্রান্ত শীর্ষ সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উন্নয়নের অধিকার মোকাবিলায় একটি যথাযথ, ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই পদ্ধতি গ্রহণের জন্য উন্নত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণ এবং দেশগুলোকে সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নৈতিক বাধ্যবাধকতার কথাও স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি বলেন, ‘পরিবেশ সম্পর্কিত বৈশ্বিক চুক্তি নিয়ে আলোচনার সময় ক্ষতিগ্রস্ত ও দরিদ্র দেশগুলোকে বিবেচনায় নিতে হবে।’ শেখ হাসিনা ঐতিহাসিক প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে পরিবেশ সম্পর্কিত ওই বৈশ্বিক চুক্তি সচল রাখতে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর প্রশংসা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশ অন্যতম অধিক ক্ষতিগ্রস্ত একটি দেশ। এই ইস্যু সমাজে শান্তি-স্থিতিশীলতা, সমৃদ্ধি নিশ্চিতকরণ ও বৈষম্য নিরসনের বৃহত্তর পরিসরে বিবেচনা করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘দৃষ্টান্ত স্থাপন ও অগ্রগামী বাংলাদেশ কর্মে বিশ্বাসী। আমরা উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে প্রথম নিজস্ব সম্পদে জাতীয় জলবায়ু পরিবর্তন তহবিল গঠন ও জাতীয় জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল প্রণয়ন করেছি। প্রতিবছর জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশ জিডিপির ১ শতাংশেরও বেশি ব্যয় করে।’

পরে প্রধানমন্ত্রী বেকম্যান প্যালেসে যুক্তরাজ্য ও মাল্টার প্রধানমন্ত্রীদের আয়োজনে কমনওয়েলথ দেশগুলোর প্রধানদের এক সংবর্ধনায় যোগ দেন। সন্ধ্যায় তিনি ম্যাডিসন অ্যাভিনিউতে প্যালেস হোটেলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আয়োজিত অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ও ছিলেন। বাসস।