এসডিজি বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর



প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এসডিজি বাস্তবায়নে অর্থায়নের ঘাটতি মোকাবিলায় বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন। কারণ এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে সম্পদের যোগান দেওয়া সরকারগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী গতকাল জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে উচ্চপর্যায়ের এক আলোচনায় একথা বলেন।
আঙ্কটাডের তথ্যের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে প্রতি বছর বিশ্বের ৩ দশমিক ৩ থেকে ৪ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। এজন্য এসডিজি বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সদর দফতরে ‘ক্রিয়েটিং এ পলিসি ভিশন ফর এসডিজি ফিন্যান্স ফ্যাসিলিটেটিং প্রাইভেট সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট ইন দ্য এসডিজি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, উন্নয়নশীল দেশের জিডিপি’র ৬০ শতাংশ, পুঁজি প্রবাহে ৮০ শতাংশ ও কর্মসংস্থানের ৯০ শতাংশ বেসরকারি খাতের আওতায়। এজন্য এসডিজি বাস্তবায়নে তাদের অংশগ্রহণ ও দায়বদ্ধতা রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে বেসরকারি খাত শক্তিশালী ও উৎসাহী অংশীদার হিসেবে বিকশিত হচ্ছে। তাদের এই আগ্রহের প্রেক্ষাপটে তার সরকার এসডিজির জন্য বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বাড়াতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আওতায় বেশ কিছু সংস্থা গঠন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা উৎসাহব্যঞ্জক যে বিশ্বব্যাপী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এসডিজিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। বিশ্বের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সংস্থার কার্যবিবরণী ও টেকসই ব্যবসা পরিকল্পনায় এসডিজিকে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এফডিআই’র ওপর গুরুত্বারোপ করে বড় ধরনের বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ আগামী কয়েক বছরে ১শ’ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে এফডিআই ২০১০ সালে ১ বিলিয়ন ডলার ছিল। সেখান থেকে ২০১৬ সালে ২.৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
শেখ হাসিনা এ ধরনের বিনিয়োগের গুরুত্বের স্বীকৃতি প্রদান ও ইউএনডিপি ইম্প্যাক্ট ফিন্যান্স (ইউএনএসআইএফ) গঠনের জন্য ইউএনডিপিকে ধন্যবাদ জানান।
‘বিল্ড বাংলাদেশ- ইউএনডিপি ইম্প্যাক্ট ফান্ড’ এর আওতায় ইউএনএসআইএফ’র প্রথম বিনিয়োগ হবে বাংলাদেশে।
এতে বাংলাদেশ অনেক উদ্ভাবনী প্রস্তাব দিয়েছে এবং এই তহবিল চীনের ইম্প্যাক্ট ইনভেস্টরসের সহায়তায় সাশ্রয়ী আবাসন গড়ে তুলতে কাজ করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি সবার জন্য উপযোগী ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ বাড়াতে একত্রে কাজ করার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী এসডিজি বাস্তবায়ন, অর্থায়ন ও তদারকি শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে বক্তৃতাকালে দক্ষিণ-দক্ষিণ এবং ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের উদ্ভাবন বিনিময়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, দক্ষিণের দেশগুলো এক অপরের উন্নয়ন ও চ্যালেঞ্জগুলো বুঝতে পারে। এজন্য দক্ষিণের মধ্যে গভীর বোঝাপড়া ও বৃহত্তম সমঝোতা গড়ে তোলা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এসডিজি ট্রাকার নামে একটি সহজ কিন্তু শক্তিশালী প্রক্রিয়ার উদ্ভাবন করেছে। এর মাধ্যমে সূচকসহ এসডিজি’র লক্ষ্যমাত্রা ও অগ্রগতি জানা যাবে। এটি একটি উদ্ভাবনী কার্যপ্রক্রিয়া। আমরা এই ব্যবস্থা দক্ষিণের দেশগুলোর জন্যও সহজলভ্য করবো। বাসস।