‘বেশি দামে কিনেছি, তাই বেশি দামেই বিক্রি করছি’

চালের দামপাইকারি বাজারে চালের দাম কেজিতে তিন টাকা কমলেও খুচরা বাজারে তেমন কমেনি। বেশিরভাগ দোকানেই বিক্রি হচ্ছে আগের দামে। তবে কোনও কোনও দোকানে দুই থেকে তিন টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ পাইকারি ব্যবসায়ীরা শুধু ক্যামেরা দেখলেই দাম কমায়। ক্যামেরা চলে গেলে বেশি দামে বিক্রি করে। তারা বলেন, ‘আমরা বেশি দাম দিয়ে কিনেছি, তাই বেশি দামে বিক্রি করছি। কম দামে কিনলে কম দামে বিক্রি করবো।’

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কাওরান বাজার ও মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

গত শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) কাওরান বাজারের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছিলেন, কয়েকদিনের মধ্যেই চালের দাম কমে যাবে। কিন্তু গত তিন দিনেও তার কোনও লক্ষণেই দেখা যায়নি।

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে পাইকারি বাজারে চাল কিনতে যাওয়া খুচরা চাল ব্যবসায়ী শাহীন জানান, রবিবার কৃষি মার্কেট থেকে ৫০ কেজির বস্তা (মিনিকেট চাল) তিন হাজার ৫০ টাকায় কিনেছি। যার প্রতিকেজির দাম পড়েছে ৬১ টাকা। আগে এই চালই কিনেছি তিন হাজার ১০০ টাকায়। তাহলে খরচ পুষিয়ে কত কম দামে বিক্রি করবো। বেশি দামে কিনেছি, তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হবে।’

কাওরান বাজারের খুচরা চাল ব্যবসায়ী মায়ের দোয়া স্টোরের মালিক বাবলু বলেন, ‘গত তিন-চার দিনে চালের বাজারের কোনও হেরফের হয়নি। যারা আগে বেশি দাম দিয়ে চাল কিনেছে, তারা বেশি দামে বেচার চেষ্টা করছেন। না পারলে হয়তো কম দামে বিক্রি করছেন। তবে তা খুব বেশি নয়।’

পাইকারি বাজারে দাম কমার বিষয়টি তুলে ধরে এই খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, ‘পাইকারি বাজারে সরু চালের দাম কমেছে খুবই সামান্য। চালের দাম ১০ টাকা বাড়লেও কাগজে কলমে কমেছে তিন টাকা। বাস্তবে দেড় টাকা। তাই চালের দাম খুচরা বাজারে কমার সুযোগ নেই আরও কয়েক দিনেও।’

কাওরান বাজারের রাসেল স্টোরের মালিক মনোয়ার হোসেন ও মোহাম্মদপুরের শাহীনসহ অন্যান্য খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘ভারতীয় চাল আসায় মোটা চালের দাম কমেছে। পাইকারি বাজারে ভারতীয় চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা কেজি দরে এবং ৫০ কেজির বস্তা দুই হাজার ৪০০ টাকা। এতে মোটা চালের দাম কমেছে তিন থেকে চার টাকা।’

কাওরান বাজার ও মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরু চাল ৫০ কেজির বস্তা দুই হাজার ৯৫০ টাকা। খরচসহ বস্তাপ্রতি মোট দাম দুই হাজার ৯৮০ টাকা। পাইকাররা বিক্রি করবে তিন হাজার টাকা বস্তা। সেই হিসেবে কেজি প্রতি দাম পড়ে ৬০ টাকা। খুচরা পর্যায়ে ৬৩ থেকে ৬৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হবে।

খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, চালের দাম কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত বাড়লেও পাইকারি বাজারেই দাম কমেছে মাত্র তিন টাকা। এতে খুচরা বাজারে তেমন প্রভাব পড়ার কথা নয়। সে কারণেই দাম কমছে না।