বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শরীরের অসুখের মতো মনের অসুখকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না। কিন্তু এ রোগের জন্যও চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।
জানতে চাইলে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মেখলা সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের এখানে মনে করা হয়, চিকিৎসকের কাছে যাওয়া মানে বড় ধরনের কোনও লেভেলিং হয়ে যাওয়া। মানুষ হয়তো তাকে সাধারণভাবে পাগল বলে আখ্যায়িত করবে। আর আমাদের দেশে মোট জনগোষ্ঠীর তুলনায় মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের সংখ্যাও অনেক কম। মানসিক সেবার বিষয়টি এখানে অবহেলিত।’ এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘এটা সচেতনতার অভাব। মেডিক্যাল শিক্ষায় মানসিক স্বাস্থ্যকে সেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। যেভাবে অন্য বিষয়গুলোর প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ থাকে, সেভাবে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে লেখাপড়ার আগ্রহ থাকে না। তাই মানসিক রোগীর তুলনায় মনোরোগ চিকিৎসকের সংখ্যা কম।’
মানসিক সমস্যায় ভোগা মানুষকে সুস্থ করে তুলতে সচেতনতার কোনও বিকল্প নেই উল্লেখ করে ডা. মেখলা সরকার বলেন, ‘পরিবারের কোনও সদস্য অস্বাভাবিক আচরণ করলেই বুঝতে হবে, তিনি কোনও না কোনও মানসিক সমস্যার ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন। তখন তাকে দূরে ঠেলে না দিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। তার সঙ্গে বন্ধুর মতো আচরণ করতে হবে, কথা বলতে হবে। তাহলে তার মধ্যে নিরাপত্তাবোধ, নির্ভরতা ও আস্থা তৈরি হবে। কিন্তু এই কথা বলার জায়গাটা আমাদের মধ্যে ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। এ কারণে আমরা নানা ধরনের মানসিক সমস্যায় ভুগছি।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডা. সালাহউদ্দিন কাউসার বিপ্লব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চিকিৎসাসেবার অপ্রতুলতা কোনোভাবেই আমরা অস্বীকার করতে পারি না। রয়েছে চিকিৎসক সংকটও।’ তিনি বলেন, ‘যে পরিমাণ মানসিক রোগীকে সহায়তা দেওয়া দরকার, তা আমাদের দেশে নেই। এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় লোক আমাদের নেই।’
উল্লেখ্য, সারা বিশ্বে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে প্রতিবছর ১০ অক্টোবর নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস পালিত হয়ে আসছে।