সু চির ভাষণ সময়ক্ষেপণের কৌশল

রোহিঙ্গা সংকটমিয়ানমার আবারও প্রমাণ করলো তারা আন্তর্জাতিক চাপের কারণে রোহিঙ্গা বিষয়ে সময়ক্ষেপণের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। মিয়াসমারের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাং ও স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির যুগলবন্দী একদিকে তাদের দেশের জনগণকে জানাচ্ছে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে চলে যাক আবার পশ্চিমা বিশ্বকে বলছে আমরা তাদের ফেরত নেব। বাংলাদেশি কর্মকর্তারা এমনটিই মনে করছেন।

বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) সকালে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাং তার ফেসবুক পেজে রোহিঙ্গাদের আবারও ‘বাঙালি’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, উপনিবেশের কালে ব্রিটিশ শাসকরা বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে এসেছে। তিনি আরও বলেছেন, বাঙালিরা বাংলায় ফিরে যাক।

একই রাতে মিয়ানমার স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি এক ভাষণে বলেছেন, আমরা যদি করণীয় বিষয়গুলোর তালিকা করি ও অগ্রাধিকার ঠিক করি তাহলে তিনটি প্রধান করণীয় সামনে আসে। সেগুলো হলো- প্রথমত, বাংলাদেশে যারা চলে গেছে তাদের প্রত্যাবাসন ও কার্যকরভাবে তাদের মানবিক সহায়তা দেওয়া, দ্বিতীয়ত, পুনরায় স্থানান্তর ও পুনর্বাসন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিয়ানমার সম্পর্কে অভিজ্ঞ বাংলাদেশ সরকারের একজন কর্মকর্তা বলেন, মিয়ানমারকে বিশ্বাস করার কোনও কারণ নেই। আন্তর্জাতিক চাপ সরে গেলে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে তারা কোনও আলোচনাও করবে না।

তিনি আরও বলেন, মিয়ানমার সেনাপ্রধান ও স্টেট কাউন্সেলরের মধ্যে যুগলবন্দী চলছে। একজন গরম কথা বলছেন এবং আরেকজন সেটিকে ঠান্ডা করার জন্য নরম সুরে কথা বলছেন। এটি একটি কৌশল এবং এর মাধ্যমে তারা অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি ও বিদেশিদের শান্ত করার চেষ্টা করছে।

ওই কর্মকর্তা বলেন, মিয়ানমার সেনাপ্রধান তার দেশের লোকদের জানাচ্ছেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে তারা ছাড় দেবেন না। আবার সু চি, যার পশ্চিমা বিশ্বে এখনও কিছু গ্রহণযোগ্যতা আছে, তাকে দিয়ে বলাচ্ছেন রোহিঙ্গাদের ফেরত নেব এবং আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা করছি। তিনি বলেন, সামরিক বাহিনী, অং সান সু চি ও মিয়ানমার জনগণ রোহিঙ্গা ইস্যুতে একমত এবং সে কারণে আন্তর্জাতিক চাপ সরে গেলে তাদের আর কোনও সমস্যা থাকবে না।

গত ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর নির্যাতন শুরু হলে পাঁচ লাখ ৪০ হাজারের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।