ইইউ-র নিষেধাজ্ঞায় মিয়ানমারের জেনারেলরা

মিয়ানমারের সেনা প্রধান মিন অং

মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাংসহ দেশটির জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাদের ওপর আমন্ত্রণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

সোমবার (১৬ অক্টোবর) ইইউর পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে একটি রেজ্যুলেশন গৃহীত হয়। এতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সঙ্গে সব ধরনের সামরিক সহযোগিতা তারা পুনর্মূল্যায়ন করবে।

এছাড়াও অভ্যন্তরীণ দমননীতিতে ব্যবহার করা যায় এমন কোনও অস্ত্র মিয়ানমারের কাছে বিক্রি না করার বিষয়ে ইইউ ব্যবস্থা নিয়েছে। এতেও পরিস্থিতির উন্নতি না হলে ইউরোপীয় কাউন্সিল বাড়তি পদক্ষেপ নেবে। রেজ্যুলেশনে আরও বলা আছে, যদি ইতিবাচক পরিস্থিতি দেখা যায় তবে তার প্রতি সমর্থন থাকবে ইইউর।

ইইউর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফেডেরিকা মঘেরিনির সভাপতিত্বে বৈঠকে জার্মানির অর্থনীতি ও জ্বালানিবিষয়ক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও ভাইস চ্যান্সেলর সিগমার গ্যাব্রিয়েল, বেলজিয়ামের উপপ্রধানমন্ত্রী দিদিয়ের রেনডার্স, বুলগেরিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী ইকাতেরিনা জাহারিয়েভা, ক্রোয়েশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী মারিজা পেজচিনোভিচ বুরিক, চেক প্রজাতন্ত্রের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আইভো স্রামেক, ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রেস স্যামুয়েলসেন, ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাঁ ইভস দ্রিয়াঁ, এস্তেনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্ভেন মাইকসের ছাড়াও  স্পেন, ইতালি, সাইপ্রাস, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবার্গ, হাঙ্গেরি ও নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, মাল্টার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আয়ারল্যান্ড ও গ্রিসের স্থায়ী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, মানবাধিকার লঙ্ঘন, নির্বিচারে গুলিবর্ষণ, স্থলমাইনের ব্যবহার, যৌন নির্যাতন ও সহিংসতার ঘটনায় চরম উদ্বেগ প্রকাশ করে রেজ্যুলেশনে বলা হয়, এটি গ্রহণযোগ্য নয় এবং তা  অবশ্যই অবিলম্বে থামাতে হবে।

হত্যাসহ নির্বিচারে হামলা ও ভয়-ভীতি প্রদর্শনের কারণে ২৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। রেজ্যুলেশনে বলা হয়, যখন এত বেশি লোক পালিয়ে আসে তখন বুঝতে হবে সংখ্যালঘুদের নিজেদের জায়গা জমি থেকে উচ্ছেদ করে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য এটি একটি পরিকল্পিত কার্যক্রম। এজন্য এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন শরণার্থীদের নিরাপদ ও মর্যাদার সঙ্গে প্রত্যাবাসন।

রেজ্যুলেশনে আরও বলা হয়, যেহেতেু মানব্কি সহায়তা সেখানে দেওয়া যাচ্ছে না এবং মিডিয়ার কোনও প্রবেশাধিকার নেই তাই সেখানে প্রকৃত প্রয়োজন কী সেটি মূল্যায়ন করা যাচ্ছে না। এছাড়া, সমস্যা সমাধানের জন্য বাংলাদেশসহ সব প্রতিবেশীর সঙ্গে আলোচনার জন্য মিয়ানমারকে আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। রেজ্যুলেশনে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসাও করা হয়।

আগামী মাসে মিয়ানমারে অনুষ্ঠেয় আসেম পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের পাশে রোহিঙ্গা বিষয়ে গঠনমূলক আলোচনার ওপর জোর দিয়ে বলা হয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন এশিয়ার অন্য দেশগুলোর সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ রাখবে। এছাড়া, আসিয়ান জোটভুক্ত ১০টি দেশের মধ্যে যারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের অংশীদার তাদেরও এ বিষয়ে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয় রেজ্যুলেশনে।