জুডিশিয়াল স্বৈরাচার ভয়াবহ ব্যাপার: হারুন উর রশীদ

‘বিচারপতিরা এ দেশের যেকোনও ফরমেটেই হোক চাকরি করেন। ফলে তাদের জবাবদিহিতা থাকবেই। রাষ্ট্রপতি যেমন জবাবদিহি করেন, প্রধানমন্ত্রী যেমন জবাবদিহি করেন, তেমনি নিয়ম থাকা উচিত- বিচারপতিকেও সঠিক ওয়েতে জবাবদিহি করতে হবে। দেশে তো আইন দুটো নয়, আইন তো একটি দেশে একটিই। বিচারপতিদের জন্য আইন কেন আলাদা হবে।’ বৃহস্পতিবার ‘বিচারের রাজনীতি, রাজনীতির বিচার’ শীর্ষক বাংলা ট্রিবিউন বৈঠকিতে অংশ নিয়ে বাংলা ট্রিবিউনের হেড অব নিউজ হারুন উর রশীদ এসব কথা বলেন।  তিনি বলেন, ‘জুডিশিয়াল স্বৈরাচার ভয়াবহ ব্যাপার।’

হারুন উর রশীদ (ছবি- নাসিরুল ইসলাম)

হারুন উর রশীদ বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা দেশেরে বাইরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তার বিরুদ্ধে ১১টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এমনই অনেক ড্রামা সামনে অপেক্ষা করছে বলে মনে হয়, ফলে সামনে এই টপিক নিয়ে অনেক কথাই আমাদের বলতে হবে হয়তো।’

তিনি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি দেশের বাইরে গেলেও এই আলোচনা এখনও চলমান। তিনি গিয়েছেন বলেই শেষ হয়ে যাননি বরং এটা নিয়ে সামনে এখনও ড্রামা চলছে। সামনেও এমন ড্রামা অপেক্ষা করছে বলে সাংবাদিক হিসেবে আমার মনে হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘জুডিশিয়াল স্বৈরাচার ভয়াবহ বিষয়। প্রধান বিচারপতি রায় দিয়ে জুডিশিয়াল ডিক্টেটরশিপ স্থাপন করতে চেয়েছিলেন। বিবেক একটি আপেক্ষিক বিষয়। জবাবদিহিতা যদি বিবেকের কাছেই থাকে, তাহলে পৃথিবীর একটি গ্রুপ আছে- যারা বিচারপতি, এদেরই শুধুমাত্র বিবেক আছে, আর কারও বিবেক নাই, তা আমি মনে করি না। আমি মনে করি না, একজন বিচারপতির চেয়ে আমার বিবেকবোধ কোনও অংশে কম আছে। একজন বিচারপতির বিরুদ্ধে হলেও তো দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে। সুতরাং বিবেক জিনিসটি শুধুমাত্র বিচারপতিদের থাকবে, আর সাধারণ মানুষের থাকবে না, আমি তা বিশ্বাস করি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে যে গড়পরতা মানুষ, তার চেয়ে খুব বেশি অ্যাডভান্স জুডিশিয়ারি হতে পারে না। একটি প্রশ্ন করা হয়, আমাদের সংসদ সদস্যরা অনেকে অযোগ্য, লেখাপড়া জানেন না। কিন্তু তারা আমাদেরই প্রতিনিধি। এটা আমি বারবারই বলি, আমি জবাবদিহি করবো তার কাছেই, যিনি নির্বাচিত। বিচারপতিরা এ দেশের যেকোনও ফরমেটেই হোক চাকরি করেন। ফলে তাদের জবাবদিহিতা থাকবেই। কিন্তু আমার জবাবদিহিতা আমিই করবো, এটা হতে পারে না।  যেকোনোভাবেই হোক এটা সেচ্ছাচারিতা। আমার জবাবদিহিতা থাকতে হবে অন্যের কাছে। রাষ্ট্রপতি যেমন জবাবদিহি করেন, প্রধানমন্ত্রী যেমন জবাবদিহি করেন, তেমনি নিয়ম থাকা উচিত- বিচারপতিকেও সঠিক উপায়ে জবাবদিহি করতে হবে। দেশে তো আইন দুটো নয়, আইন তো একটি দেশে একটিই। বিচারপতিদের জন্য আইন কেন আলাদা হবে। যিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদকের দেওয়া চিঠি বন্ধ করেন, তার তো সেই পদে থাকার কোনও অধিকার নেই।’

বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় রাজধানীর শুক্রাবাদের বাংলা ট্রিবিউন স্টুডিও থেকে বৈঠকি সরাসরি সম্প্রচার করে এটিএন নিউজ। পাশাপাশি বাংলা ট্রিবিউনের ফেসবুক ও হোমপেজে লাইভ দেখা যায় এই আয়োজন। বৈঠকি সঞ্চালনা করেন মুন্নী সাহা।

বৈঠকিতে অন্যদের মধ্যে অংশ নেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, সাংবাদিক স্বদেশ রায়, আইনজীবী ব্যারিস্টার রুমীন ফারহানা ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।


আরও পড়ুন-
‘বিচারের রাজনীতি, রাজনীতির বিচার’ শীর্ষক বাংলা ট্রিবিউন বৈঠকি শুরু