মানবতাবিরোধী অপরাধ: ঘোড়ামারা আজিজের রায় বুধবার

ঘোড়ামারা আজিজমানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা ও গাইবান্ধার সাবেক সংসদ সদস্য আবু সালেহ মুহাম্মদ আব্দুল আজিজ মিয়া ওরফে ঘোড়ামারা আজিজসহ ছয় আসামির বিরুদ্ধে আগামীকাল বুধবার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
মঙ্গলবার বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায়ের দিন ধার্য করে দেন। ২০১০ সালে ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর এখন পর্যন্ত ২৮টি মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রসিকিউশনের পক্ষে যুক্তিতর্কের শুনানি করেন সায়েদুল হক সুমন ও সৈয়দ হায়দার আলী। আসামিদের মধ্যে পলাতক লতিফের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন খন্দকার রেজাউল এবং পলাতক আসামিদের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী গাজী এমএইচ তামিম যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।

আজিজ ছাড়া বাকি আসামিরা হলেন, রুহুল আমিন ওরফে মঞ্জু (৬১), আব্দুল লতিফ (৬১), আবু মুসলিম মোহাম্মদ আলী (৫৯), নাজমুল হুদা (৬০) ও আব্দুর রহিম মিঞা (৬২)। আসামিদের মধ্যে লতিফ ছাড়া সবাই পলাতক। জামায়াতের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আজিজ মিয়া ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত চার দলীয় জোটের অধীনে গাইবান্ধা সুন্দরগঞ্জ-১ আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন। বাকিদের মধ্যে রুহুল আমিন ওরফে মঞ্জু (৬১) জামায়াতের সুন্দরগঞ্জ থানা শাখার সক্রিয় সদস্য, আব্দুল লতিফ জামায়াতে ইসলামীর সক্রিয় কর্মী এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলা পর্যায়ের নেতা, আবু মুসলিম মোহাম্মদ আলী মুক্তিযুদ্ধের আগে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের সক্রিয় নেতা ছিলেন। বাকিরাও বিভিন্ন সময়ে জামায়াতের সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।

গত ২৩ অক্টোবর উভয়পক্ষের দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখা হয়েছিল।

২০১৬ সালের ২৬ জুন অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এই ছয় আসামির বিচার শুরু করে আদালত।

যত অভিযোগ: আসামিদের বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ রয়েছে। প্রথম অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ৯ অক্টোবর সকাল ৮টা বা সাড়ে ৮টার দিকে আসামিরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ২৫/৩০ জন সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে গাইবান্ধা জেলার সদর থানাধীন মৌজামালি বাড়ি গ্রামে হামলা চালিয়ে নিরস্ত্র মানুষকে আটক, নির্যাতন ও অপহরণ করে। এর মধ্যে গনেশ চন্দ্র বর্মন নামে একজনের হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে দিয়ে হত্যা করে এবং বাকিদের ছেড়ে দেয়।

দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, একই দিন বিকাল ৪টার দিকে আসামিরা সুন্দরগঞ্জ থানার মাঠেরহাট ব্রিজ এলাকায় ছাত্রলীগের নেতা বয়েজ উদ্দিনকে আটক করে রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। ১৩ অক্টোবর বিকালে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

তৃতীয় অভিযোগ অনুযায়ী,  ‘৭১ সালের ১০-১৩ অক্টোবর আসামিরা পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগিতায় সুন্দরগঞ্জ থানার ১৩ জন চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে আটক করে। তাদের তিন দিন ধরে নির্যাতনের পর ক্যাম্পের কাছে নদীর ধারে নিয়ে গিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়।