বিভিন্ন বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধারাও ভাতা পাবেন: প্রধানমন্ত্রী

তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)সশস্ত্র বাহিনী, আনসার, পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীতে কর্মরতদের মধ্যে যারা মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তারা ২০১৮ সাল থেকে ভাতা পাবেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে এক অনুষ্ঠানে তিনি এই ঘোষণা দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যারা ১৯৭১ সালে বিভিন্ন বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন ও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদের ও তাদের পরিবারকে ভাতা দেবো। সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, আনসারসহ বিভিন্ন বাহিনীতে যারা কর্মরত ছিলেন, চাকরি করার কারণে তাদের তখন ভাতা দেওয়া হয়নি। তাদের বেশিরভাগই, প্রায় সবাই এখন অবসরে। তাদের পরিবার আছে। অনেকে কষ্টে আছেন। ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে তাদের ভাতা দেওয়া হবে।’

ভাতা বৃদ্ধি, চাকরিতে কোটাসহ মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে নেওয়া বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘অনেক ত্যাগ-তিতীক্ষার মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা। যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন, অবদান রেখেছেন, আমরা আমাদের সীমিত সামর্থ্য দিয়ে তাদের সম্মানিত করার চেষ্টা করছি।’ বীরশ্রেষ্ঠদের পরিবার, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)

আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা ও সৌজন্য সাক্ষাৎ, সশস্ত্র বাহিনীর ২০১৬-’১৭ সালের শান্তিকালীন সেনা/নৌ/বিমান বাহিনী পদক এবং অসামান্য সেবা পদকপ্রাপ্ত সদস্যদের পদক প্রদান অনুষ্ঠানে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। মোট ২৬ জন সদস্যকে পদক পরিয়ে দেন তিনি। এসময় প্রধানমন্ত্রী সাত জন বীরশ্রেষ্ঠ’র নিকটাত্মীয়সহ ১০১ জন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীর হাতে সম্মানীর চেক, শাল, মোবাইল ও ট্যাব উপহার হিসেবে তুলে দেন। প্রধানমন্ত্রী তাদের সঙ্গে কথা বলেন ও খোঁজ-খবর নেন।বীরশ্রেষ্ঠদের পরিবার, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যারা একটি দেশ, একটি জাতি গঠনের জন্য কাজ করেছে তাদের অনুভূতি থাকে। আর যারা উড়ে এসে জুড়ে বসে, তাদের দেশ-জাতির প্রতি কোনও দরদ থাকে না। ইতিহাস কখনও মুছে ফেলা যায় না, ইতিহাস ঠিকই তার স্থান করে নেয়। এটা আরেকবার প্রমাণিত হয় ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণের পর। সেসময় দেশে শুধু উন্নয়ন হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সময় পেয়েছিলেন মাত্র সাড়ে তিন বছর। তিনি আরও সময় পেলে বাংলাদেশ অনেক আগেই বিশ্বের দরবারে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারতো।’বীরশ্রেষ্ঠদের পরিবার, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ঘাতকরা ৭ মার্চের ভাষণ ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিল। সেই ৭ মার্চের ভাষণ এখন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। ইতিহাস কখনও মুছে ফেলা যায় না, ইতিহাস নিজেই তার অবস্থান করে নেয়।’


আরও পড়ুন- শিখা অনির্বাণে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা