কে এই ‘ঘোড়ামারা’ আজিজ

ঘোড়ামারা আজিজএকাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াত নেতা ও গাইবান্ধার সাবেক সংসদ সদস্য আবু সালেহ মো. আব্দুল আজিজ মিঞা নিজ এলাকায় ‘ঘোড়ামারা আজিজ’ নামেই বেশি পরিচিত। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানি বাহিনীর দোসর আবদুল আজিজ ছিল গাইবান্ধায় অত্যাচার-নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ ও লুটতরাজের অন্যতম হোতা।

আব্দুল আজিজের ‘ঘোড়ামারা আজিজ’ হিসেবে পরিচিত হওয়ার বিষয়ে মামলার প্রসিকিউটর সাইয়েদুল হক সুমন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন আব্দুল আজিজ তার বাহিনী নিয়ে নিয়মিত গাইবান্ধার মাঠেরহাট ব্রিজ পাহারা দিতেন। সেই ব্রিজের নিচেই ছিল আখক্ষেত। একদিন সেই ক্ষেত নড়েচড়ে ওঠতে দেখে ভয় পেয়ে যায় তারা। মুক্তিযোদ্ধারা হামলা চালাতে এসেছে ভেবে তারা আখক্ষেতে এলোপাতাড়ি গুলি করে। কিছু পরে তারা পরিস্থিতি বুঝতে ক্ষেতের ভেতরে যায়। তখন সেখানে তারা একটি ঘোড়াকে মরে পড়ে থাকতে দেখে। এরপর থেকেই এলাকায় সবাই তাকে ঘোড়ামারা আজিজ বলে ডাকতে শুরু করে।’

মামলার তথ্য বিবরণী থেকে জানা যায়, স্বাধীনতা যুদ্ধের সমর্থকদের বাড়িঘর লুটপাট, জ্বালানো, ধর্ষণ, নৃশংসভাবে খুনের ঘটনায় নেতৃত্বদানকারী আব্দুল আজিজ জেলার রাজাকার কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতো। স্বাধীনতার পরেও আজিজ ১৪জন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আজিজ মিয়া ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত চারদলীয় জোটের অধীনে গাইবান্ধা-সুন্দরগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে দু’টি মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাসহ ১৩টি মামলা হয়।

এরমধ্যে, ২০১৩ সালে সুন্দরগঞ্জ থানায় চার পুলিশ সদস্য হত্যা মামলার অন্যতম আসামি এই আজিজ। পরে ২০১৪ সালের ২৬ অক্টোবর মানবতাবিরোধী অপরাধের দু’টি মামলায় আজিজের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু হয়।