যুক্তরাজ্যের মানদণ্ডে লাইসেন্স পাবেন দেশের বৈমানিক ও উড়োজাহাজ প্রকৌশলীরা

ছবি: সাজ্জাদ হোসেনদেশের বৈমানিক ও উড়োজাহাজ প্রকৌশলীদের যুক্তরাজ্যের মানদণ্ডে পরীক্ষা ও লাইসেন্স প্রদানের উদ্যোগ নিচ্ছে বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন অথরিটি। ফলে বিশ্ববাজারে তাদের জন্য কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ইতোমধ্যে বাংলাদেশের সিভিল এভিয়েশনকে নিজেদের মানদণ্ডে পরীক্ষা ও সার্টিফিকেট প্রদান সংক্রান্ত প্রস্তাবনা দিয়েছে যুক্তরাজ্যের সিভিল এভিয়েশন অথরিটির ইন্টারন্যাশনাল ডিভিশন। এটি বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশে বসেই অনলাইনে লাইসেন্সের জন্য পরীক্ষা দেওয়া যাবে। আর পাস করলেই মিলবে যুক্তরাজ্যের সিভিল এভিয়েশন অথরিটির মানদণ্ডের লাইসেন্স।

ওই প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়েছে— বাংলাদেশ থেকে প্রফেশনাল ফ্লাইট ক্রু (উড়োজাহাজ ও হেলিকপ্টার) ও এয়ারক্রাফট মেইনট্যানেন্স কাজের লাইসেন্স পেতে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন আগ্রহীরা।

সূত্র জানায়, যুক্তরাজ্যের মানদণ্ডে লাইসেন্স পরীক্ষার জন্য তৈরি করা হবে ই-এক্সাম সিস্টেম। এর অংশ হিসেবে কম্পিউটার, ল্যাব ও অন্যান্য স্থাপনার জন্য ব্যয় হবে ৫২ হাজার ২৫০ ইউরো। আর প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে গুনতে হবে ৭৫ ইউরো করে।

নিরাপত্তা সফটওয়্যারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত থাকবে কম্পিউটার। ফলে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ছাড়া পরীক্ষার্থী অন্যকিছু দেখতে বা করতে পারবেন না। পরীক্ষা শেষ হওয়ার দ্রুততম সময়ের মধ্যে ফল প্রকাশ হবে।

জানা গেছে— পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আবেদন গ্রহণ, ব্যবস্থাপনা, পেমেন্ট গ্রহণ ও পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা যাবে ই-এক্সাম সিস্টেমের মাধ্যমে। বাংলাদেশের সিভিল এভিয়েশনের কার্যালয়ে বসে অনলাইনে পরীক্ষা দিতে পারবেন আগ্রহীরা। এসব পরীক্ষার জন্য ইএসএএস মানদণ্ডে প্রশ্নপত্র তৈরি করবে যুক্তরাজ্যের সিভিল এভিয়েশন।
এ প্রসঙ্গে সিভিল এভিয়েশন অথোরিটির সদস্য (অপারেশন অ্যান্ড প্ল্যানিং) মোস্তাফিজুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের মানদণ্ডে পরীক্ষা গ্রহণ ও লাইসেন্স দেওয়ার জন্য আমরা যুক্তরাজ্যের সিভিল এভিয়েশনের প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছি। এতে বাংলাদেশি পাইলট ও উড়োজাহাজ প্রকৌশলীদের বিদেশে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি হবে আরও বেশি। তবে সার্টিফিকেট প্রদানসহ অন্যান্য বিষয় কোন প্রক্রিয়ায় হবে তা নিয়ে আমরা কাজ করছি।’

যুক্তরাজ্যের সিভিল এভিয়েশন অথরিটির অধীনে বিশ্বের ২৫টিরও বেশি দেশে ও ১০০টি পরীক্ষা কেন্দ্রে বৈমানিক ও উড়োজাহাজ প্রকৌশলীদের লাইসেন্স পরীক্ষা নেওয়া হয়। প্রতি চার মাস পর এই কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। তবে পরীক্ষা খরচ ছাড়া ট্যাক্স, ভ্যাট ও সরকারি অন্যান্য ফি বাংলাদেশকে দিতে হবে। ঢাকার সিভিল এভিয়েশন সূত্র বাংলা ট্রিবিউনকে এসব তথ্য জানিয়েছে। 

গ্যালাক্সি ফ্লাইং একাডেমি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উইং কমান্ডার (অব.) এটিএম নজরুল ইসলাম মনে করেন, লাইসেন্সটি শুধু বাংলাদেশের সিভিল এভিয়েশন অথরিটির হবে নাকি ইউকে ও বাংলাদেশের যৌথ হবে তা গুরুত্বপূর্ণ। এ জায়গায় রাষ্ট্রীয় আইনগত বিষয় রয়েছে। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বললেন, ‘যদি যুক্তরাজ্যের মানদণ্ডে পরীক্ষা নেওয়া হয় তাহলে তা অবশ্যই ভালো উদ্যোগ। এতে বাংলাদেশি বৈমানিকদের গ্রহণযোগ্যতা আর দেশি-বিদেশি এয়ারলাইন্সে কাজের সুযোগ বাড়বে।’