রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: প্রথম ১ লাখ শরণার্থীর তালিকা তৈরি হয়নি

রোহিঙ্গা নিবন্ধন (ছবি: প্রতিনিধি)মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ চুক্তি চূড়ান্ত করার জন্য যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম সভা হবে আগামী ১৫ জানুয়ারি। কিন্তু ফেরত পাঠানোর জন্য এক লাখ রোহিঙ্গার তালিকা প্রণয়ন করতে পারেনি সরকার। এ কারণে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দেরি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একাধিক সূত্র জানায়, তালিকা ছাড়া প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে না। 

কক্সবাজারের শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মাদ আবুল কালাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি পর্যালোচনা করছি। সবার সহায়তায় রোহিঙ্গাদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া চলমান আছে। কিন্তু তাদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া পরিবারভিত্তিক না হওয়ার কারণে এই তালিকা তৈরি করতে আমাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’

জানা যায়, প্রথম এক লাখ রোহিঙ্গার তালিকা হবে পরিবারভিত্তিক। অর্থাৎ তাদের বাবা-মা ও সন্তানদের নাম আর অন্যান্য তথ্য থাকবে। এখন পর্যন্ত নতুন ও পুরনো মিলিয়ে সাড়ে ৯ লাখ রোহিঙ্গার নিবন্ধন হয়েছে। কিন্তু তাদেরকে নিবন্ধন করা হয়েছে এককভাবে।

তালিকাটি তৈরি করতে কত সময় লাগবে জানতে চাইলে মোহাম্মাদ আবুল কালাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।’ প্রথম যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের সভা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি একটি সূচনা পর্ব। বৈঠকের পর বুঝতে পারবো আমাদের কী ও কিভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে।’

কক্সবাজারের শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের একজন সদস্য। তিনি বলেন, ‘উভয় দেশকে একটি ঐকমত্যে পৌঁছানোর পরে প্রত্যাবাসন শুরু হবে।’

এদিকে সরকারের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রত্যাবাসনের আগে যাচাই-বাছাই করা হবে তারা মিয়ানমারের অধিবাসী কিনা। কিন্তু আমরা যদি নাম ও অন্যান্য তথ্য দিতে না পারি তাহলে তারা কী যাচাই-বাছাই করবে?’

তবে সরকারের আরেকজন কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা প্রথম তালিকাটি পরিছন্ন করতে চাই যেন তাদের যাচাই-বাছাইয়ে জটিলতা না থাকে। প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য যত দ্রুত সম্ভব এটি তৈরি করতে হবে।’

গত ২৩ নভেম্বর আলোচনার পর বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য একটি ‘অ্যারেঞ্জমেন্ট’ স্বাক্ষর করেন। এরপর প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াটি দেখাশোনার জন্য ১৯ ডিসেম্বর যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়। এর প্রথম সভা হবে ১৫ জানুয়ারি। ওইদিন রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য মাঠপর্যায়ে কাজ করার জন্য একটি ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ চুক্তিস্বাক্ষর করবেন দুই দেশের দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন শুরু করলে ৬ লাখ ৫৫ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে এসেছে বাংলাদেশে। এর আগে প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছিল।