রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে চাপ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী। রবিবার (২১ জানুয়ারি) বিদেশি কূটনীতিকদের রোহিঙ্গা বিষয়ক তিনটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি বিষয়ে ব্রিফ করার সময় তিনি এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিদেশি বন্ধুদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, আপনারা রাখাইন রাজ্যে অত্যাচার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপাক্ষিক ফোরামে অত্যন্ত সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন।’
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘চুক্তি বিষয়ে আমাদের অবস্থান হচ্ছে এসব চুক্তিতে বিদেশি বন্ধুদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ আছে এবং আমরা তাদের এই সুযোগটি নিতে আহ্বান জানিয়েছি।’ প্রত্যাবাসন রোহিঙ্গাদের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করছে এবং রাখাইনের পরিস্থিতি ভালো হওয়ার পর প্রত্যাবাসন শুরু হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফিং শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য সরকার জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করবে। চুক্তির খসড়া নিয়ে আমরা জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করছি। চুক্তি সই হলে তারা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় যুক্ত হবে।’
যাচাই-বাছাই ফরমের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি চূড়ান্ত হয়েছে। একটি পরিবারকে একটি ইউনিট হিসেবে গণ্য করা হবে।’
প্রসঙ্গত, গত ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য একটি অ্যারেঞ্জমেন্ট চুক্তিতে সই করেন। এরপর ১৯ ডিসেম্বর যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয় এবং ১৬ জানুয়ারি ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট চুক্তি সই হয়।
এএইচ মাহমুদ আলী বলেন, ‘এই তিনটি বিষয়ে আমি তাদের ব্রিফ করেছি। যেসব রোহিঙ্গার ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, সেসব রোহিঙ্গার ঘরবাড়ি তৈরি করে দেবে ভারত, চীন ও জাপান। এ প্রস্তাবেও রাজি হয়েছে মিয়ানমার।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নকে এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত করার জন্য প্রস্তাব করেছি। আমরা চাই, মিয়ানমারের প্রতিবেশী পাঁচটি রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা রাখাইন রাজ্য সফর করুক।’
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কবে থেকে শুরু হবে, এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘২৩ ডিসেম্বর থেকে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এটি চলমান রয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। আর গত বছরের অক্টোবর থেকে জুলাই পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসে প্রায় ৯০ হাজার রোহিঙ্গা। এর আগে থেকেই প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছিল।