জানতে চাইলে ডিএসসিসির প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসূফ আলী সরদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সিটি করপোরেশন যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে ঐতিহ্যবাহী নিউ র্মাকেটের মূল ভবনের কোনও ক্ষতি হবে না। আমরা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্টিল স্ট্রাকচারের মাধ্যমে ওই মার্কেটটিকে একটি আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন মার্কেটে পরিণত করব। এতে মূল নকশার কোনও ক্ষতি হবে না। ফলে আদালতের আদেশেরও কোনও ব্যত্যয় ঘটছে না। কিন্তু ব্যবসায়ীরা নিজেদের স্বার্থের জন্যই এখন আন্দোলন করছেন। তারা ওই মার্কেটে আর কোনও দোকান চালুর পক্ষে না।’
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, নিউ মার্কেট করপোরেশনের নিজস্ব সম্পত্তি। বর্তমানে সংস্থাটি অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে। করপোরেশনের কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতাও পরিশোধ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কিন্তু বিশাল এ মার্কেটটি থেকে ‘যথেষ্ট পরিমাণ’ আয় আসছে না। যে কারণে মার্কেটটির ওপরে স্টিলের স্ট্রাকচারের মাধ্যমে আরও ১২৫টি দোকান নির্মাণ করে রাজস্ব আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেয় ডিএসসিসি। তাছাড়া এই মার্কেটে দোকান বাড়লে নতুন কর্মসংস্থানের পাশাপাশি ক্রেতারাও প্রতিযোগিতামূলক দামে পণ্য কেনার সুযোগ পাবেন। কিন্তু মার্কেট ব্যবসায়ীরা তা মানতে চাইছেন না। তারা বলছেন, মার্কেটের ছাদে তলায় আরও দোকান নির্মাণ হলে বর্তমান নিউমার্কেট অন্ধকার হয়ে পড়বে। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এদিকে, ঐতিহ্যবাহী এই মার্কেটে দোকান নির্মাণের উদ্যোগের প্রতিবাদে সোমবার (২২ জানুয়ারি) সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি। তাদের দাবি, নিউ মার্কেট উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী একটি স্থাপনা। সিটি করপোরেশন এই স্থাপনাকে ধ্বংস করে দিতে চায়। তাছাড়া এক আদেশে হাইকোর্ট বলেছেন, মার্কেটের মূল নকশার বাইরে কিছুই করা যাবে না। মার্কেটের ভেতরে পার্কিং করা যাবে না। কিন্তু করপোরেশন আদালতের সেই নির্দেশ মানছে না।
নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির এই নেতা আরও বলেন, ‘সিটি করপোরেশন দোকান বরাদ্দ দেওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তাছাড়া মার্কেটের গেটে যেন কোনও যানবাহন প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য সামনে পিলার দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে সিটি করপোরেশন। মার্কেটের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশের পার্কিংয়ের জায়গায় অবৈধভাবে ময়লার ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আদালতের আদেশ থাকায় সিটি করপোরেশন এমন কাজ করতে পারে না। এর প্রতিবাদে আজ (সোমবার) আমরা ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ করেছি। এজন্য আমরা সিটি করপোরেশনকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছি।’
ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন বলেন, ‘সিটি করপোরেশন যদি তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসে, তাহলে আমাদের আন্দোলন চলবে। আমরা আগামীকাল (মঙ্গলবার) সিটি করপোরেশনের মেয়রের সঙ্গে বসব। তিনি যদি সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসেন, তাহলে আমরা আরও কর্মসূচি দেবো।’
ব্যবসায়ীদের দাবি ও আন্দোলন বিষয়ে ডিএসসিসি’র প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসূফ আলী সরদার বলেন, ‘মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে কথা বলেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তারা চাইলে তাদের দাবি-দাওয়া অফিশিয়ালি জানাতে পারতেন। কিন্তু তারা সেটাও করেননি।’
আরও পড়ুন-
নিউ মার্কেট দোতলা করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ব্যবসায়ীদের সড়ক অবরোধ