আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে কাজ শুরু করেছি। এই নির্বাচনের প্রচারণা শুরু করেছি সিলেট থেকে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর সরকার গঠন করে পাঁচ বছরে আমরা পদার্পণ করেছি। সামনে নির্বাচন। নৌকা মার্কায় আপনারা ভোট দিয়েছিলেন। আজ বাংলার গ্রামে গ্রামে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে।’ তিনি বলেন, ‘আপনাদের কাছে আমাদের আহ্বান, আপনারা অতীতে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন। এই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। এই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে, সম্মান পেয়েছে। আমরা এই দেশে কোনও অন্যায়-অবিচারকে বরদাস্ত করবো না। কোনও জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের স্থান বাংলার মাটিতে হবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের চিন্তা-চেতনা আর ওদের (বিএনপি-জামায়াত) চিন্তা-চেতনায় তফাৎ কোথায়, তা আপনারাই বুঝতে পারবেন। যারা এতিমের টাকা মেরে খায়, যারা জনগণকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারে, যারা মানুষ সেজে ধ্বংস করতে জানে, দেশকে ধ্বংস করতে জানে, বাংলাদেশকে পাঁচ বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করে তারা কীভাবে একটা দেশের উন্নতি করবে? যারা নিজেদের ভিক্ষুক হিসেবে অন্যের কাছে হাত পেতে চলতে চায়।’
বাংলাদেশ হাত পেতে চলবে না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ উন্নত হবে, সমৃদ্ধশালী হবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের সুনাম হয়। বিএনপি জোট ক্ষমতায় বাংলাদেশ তিরস্কৃত হয়। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাই হয়ে যায় তাদের মূল কাজ। এই বাংলাদেশকে উন্নয়নের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আপনারা একবার চিন্তা করে দেখুন, ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ যদি পুনরায় ক্ষমতায় না আসতো, উন্নতি হতো না। উন্নয়নের ছোঁয়া আপনারা পেতেন না, দেশবাসী পেতো না। কারণ লুটেরা এলে লুটপাট করে খেতো আর সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ চালাতো। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে বলেই দেশের উন্নয়ন হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এই সিলেটে বিএনপি যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, তাতে অনেক নেতাকর্মী আমরা হারিয়েছি। সিলেটে কোনও না কোনও দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকতো।বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে তাদের সন্ত্রাসী ক্যাডাররা আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে। বিএনপি-জামায়াত ইসলামের নামে রাজনীতি করে, মসজিদে বোমা মারে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে সবার হাতে মোবাইল ফোন আছে? কে দিয়েছে এই মোবাইল ফোন? আমরা আওয়ামী লীগ সরকার। কম্পিউটারের ওপর থেকে ট্যাক্স প্রত্যাহার করে প্রযুক্তি শিক্ষার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আট কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে।’ তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। চা না হলে আমাদের চলে না। সেই চা’র উৎপাদন বৃদ্ধি করার পাশাপাশি শ্রমিকদের উন্নয়নে কাজ করছি। সিলেট থেকেই যেন নিলাম হয়, সেই ব্যবস্থা করছি। প্রত্যেকটি এলাকায় আমরা বিশেষ অঞ্চল করে দিচ্ছি। সিলেটে আমরা বিশেষ অঞ্চল করে দিচ্ছি। যেখানে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ হবে। সেই ক্ষেত্রে আমাদের প্রবাসী বাংলাদেশিরা অগ্রাধিকার পাবে। ’
সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৮ হাজার ৪০০ পোস্ট অফিসকে আমরা ডিজিটাল সেন্টারে পরিণত করেছি। যেন মানুষ ঘরে বসে সেবা পায়। এই সিলেটে একটা মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করে দিচ্ছি, যেন এখানে বসেই পড়ালেখা করে আপনারা বড় চিকিৎসক হতে পারেন।’ তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চেয়েছিলেন, প্রতিটি মানুষ পেট ভরে ভাত খাবে। সুশিক্ষায় শিক্ষিত হবে। একটি মানুষও না খেয়ে থাকবে না। আমরা সেই স্বপ্ন পূরণে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের হতদরিদ্র মানুষের জন্য খাদ্যশস্যর ব্যবস্থা করি। প্রবাসীদের জন্য তিনটি ব্যাংকের পারমিশন দেওয়া হয়েছে। আমরা বিভিন্নভাবে এই দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।’
জনসভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লুৎফুর রহমান।