এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা চলাকালে সহিংস কর্মসূচি না দেওয়ার আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ (ছবি: এস এম আববাস)মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষা শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি)। এতে অংশ নিতে যাওয়া শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোকে সহিংস কর্মসূচি না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পরীক্ষা নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন আহ্বান জানান।

পরীক্ষা চলাকালে (৮ ফেব্রুয়ারি) বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা নিয়ে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে। এ অবস্থায় এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা আছে। ২০১৪ ও ২০১৫ সাল খুবই ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করেছি। শিক্ষার্থীরা যেন নিরাপদে পরীক্ষা দিতে পারে সেজন্য শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটির দিনগুলোতে পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। এসএসসি পরীক্ষা নিয়েছিলাম বন্ধের দিনগুলোতে। এ কারণে আমাদের সময় লেগেছে বেশি। আমরা দুই কারণে এইচএসসিতে নির্ধারিত তারিখেই নিয়েছি। প্রথমত, শিক্ষার্থীদের সময় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা মোটামুটি প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে যায়। তাছাড়া হরতাল কিংবা আন্দোলন কার্যকর হয় না।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এখনও কিছু (আন্দোলন) ঘোষণা হয়নি। তবে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে। আমাদের দেশে সবসময় এমন অবস্থা থাকে। ভালোমন্দ আন্দোলনসহ অনেক কিছু্ই ঘটে। তবে যা কিছুই হোক না কেন জনগণের কল্যাণেই তো রাজনীতি। তাই আমাদের ২০ লাখের বেশি ছেলেমেয়ের পরীক্ষা ব্যাহত হয় এমন কাজ কেউ করবেন না। আমরা সবাইকে অনুরোধ জানাবো।’

পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, প্রত্যেককেই পরীক্ষা শুরুর আধঘণ্টা আগে নির্ধারিত আসনে গিয়ে বসতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী উল্লেখ করেন, যানবাহন ও দূরত্বের কথা ভেবেই রওনা দিতে হবে পরীক্ষার্থীদের। 

কোচিং সেন্টার বন্ধ প্রসঙ্গে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘আগেই বলে দিয়েছি— কোচিং সেন্টারগুলো পরীক্ষা শুরুর সাতদিন আগে থেকেই বন্ধ থাকবে। এজন্য পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আপনার বলছেন, বাহ্যিকভাবে বন্ধ হলেও ভেতরে কোচিং সেন্টারগুলো তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। সত্যি বলতে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে এ ধরনের অনিয়ম ও অপরাধ দেখা যায়। এ বিষয়টি পুলিশকে আবারও জানাতে হবে যেন কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’

স্থায়ীভাবে কোচিং বন্ধের বিষয়ে সাংবাদিকদের শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা আগেও বলেছি, আইন তৈরি হলে কোচিং সেন্টার স্থায়ীভাবে বন্ধ করার ব্যবস্থা নেবো। আইন না থাকার কারণে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। তবে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা রয়েছে। তাই আইন চূড়ান্ত করা হচ্ছে। আইন হলে স্থায়ীভাবে কোচিং সেন্টার বন্ধের ব্যবস্থা নেবো।’

এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ২০ লাখ ৩১ হাজার ৮৯৯ পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্র ১০ লাখ ২৩ হাজার ২১২ জন, ছাত্রী ১০ লাখ ৮ হাজার ৬৮৭ জন।