ফারমার্স ব্যাংকের অনিয়মে সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করলেন মহিউদ্দীন খান আলমগীর



মহিউদ্দীন খান আলমগীরফারমার্স ব্যাংকের অনিয়মের সঙ্গে নিজের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করলেন ব্যাংকটির সাবেক চেয়ার‌্যমান ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীর। ফারমার্স ব্যাংকের অনিয়ম নিয়ে তাকে জড়িয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের কঠোর সমালোচনাও করেন তিনি। সোমবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় সরকার দলের এই এমপি বলেন, ‘তিনটি পত্রিকা আমাকে জড়িয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অসত্য তথ্য প্রকাশ করেছে।’ তবে তিনি কোনও পত্রিকার নাম উল্লেখ করেননি।
প্রকাশিত খবরের সমালোচনা করে মহিউদ্দীন খান আলমগীর বলেন, ‘পত্রিকাগুলো বলেছে, ফারমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে আমি ব্যক্তিগতভাবে ঋণ বিতরণের আগে কমিশন নিয়েছি। আমার ৭৭ বছর বয়সে কখনও এত বড় অসত্য কথার সম্মুখীন হইনি। আমি শিল্প ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় ছিলাম, কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলাম। শিল্পঋণ সংস্থার সভাপতি ছিলাম। আমার কাজ সম্পর্কে এ ধরনের কোনো উদাহরণ কেউ দিতে পারেননি।’
একটি পত্রিকার প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সরকারি দলের এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমি চেয়ারম্যান থাকতে ব্যাংক অনুমোদনবিহীন বিল দিয়েছে। কোনও অনুমোদনবহির্ভুত ঋণ ফারমার্স ব্যাংকে আমরা প্রক্রিয়াজাত করিনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন পর্যবেক্ষক দুই বছর ধরে ছিলেন। তিনি এটা অবলোকন করেছেন। এ ধরনের অনুমানভিত্তিক প্রতিবেদন আর্থিক ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা রাখার প্রতিকূল। একই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফারমার্স ব্যাংক অনুমোদিত ঋণের চেয়ে বেশি অনুমোদন-বহির্ভূত ঋণ দিয়েছি। এই অভিযোগও অস্বীকার করছি। ঋণ দেওয়ার কর্তব্য ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। তারা অনুমোদনের বাইরে কোনও ঋণ দিয়ে থাকলে তার দায়িত্ব তাদের। আমার জানা মতে, যতদিন চেয়ারম্যান ছিলাম এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। ’
এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘আমি এই অভিযোগের বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত আমার ব্যাংক হিসাবের পুরো অংশ নিয়ে এসেছি। এই অংশে কোথাও কেউ প্রমাণ করতে পারবেন না যে, কোনও ঋণ গ্রহীতার কাছ থেকে আমার এখানে কোনও অর্থ ঢুকেছে। এ প্রসঙ্গে বলা প্রয়োজন, পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী আমি ১৭ জুলাই ১৩ কেটি টাকা গ্রহাকের হিসাব থেকে আমার হিসাবে নিয়ে এসেছি। আমি এ হিসাবটি উপস্থাপন করতে চাই। এখানে ১৭ জুলাই থেকে পরবর্তী ৭ বা ১০ দিনের হিসাব আছে।’
ফারমার্স ব্যাংকে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে ব্যাংকটির এই সাবেক চেয়ারম্যান বলেন, ‘পত্রিকাগুলো বরেছে কর্মচারী নিয়োগ যথাবিধি হয়নি। নিশ্চয়তা দিতে চাই, সব ক্ষেত্রে যথাযোগ্য কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করেছি এবং করতে সমর্থ হয়েছি। ফারমার্স ব্যাংক যত বেসরকারি ব্যাংক আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরসূরিদের নিয়োগ দিয়েছে। এটা ইচ্ছাকৃতভাবে দিয়েছি।’
অনির্ধারিত আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডারের ৭৮ অনুচ্ছে উল্লেখ করে ওই অর্ডারটি বাংলাদেশ ব্যাংক যেন মেনে চলে, সে জন্য স্পিকারকে অনুশাসন দেওয়ার অনুরোধ করেন মহিউদ্দীন খান আলমগীর।